Anulekhon.blogspot.com

Tuesday, 13 October 2020

বাংলা শব্দ ও ভাষা নিয়ে কিছু কথা।


 বাংলা ভাষা নিয়ে কিছু কথা লিখতে গিয়ে প্রথমেই যে মাহান বাঙালি মহাপুরুষের কথা আসে, তিনি বিদ্যাসাগর, অর্থাৎ ঈশ্বর চন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ আধুনিক বাংলা ভাষার জনক বলা হয়, এই মহান মানুষ টিকে, বর্ণ পরিচয় অর্থাৎ বাংলা বর্ণ মালার জটিলতা কাটিয়ে আধুনিক ও সহজ সরল করে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রথম কাজটি করে ছিলেন এই মহান পুরুষ। ছোট বয়সে এনার লেখা বর্ণ পরিচয় প্রথম ভাগ ও দ্বিতীয় ভাগ পড়েন নি এরকম বাঙালি পাওয়া দুষ্কর। আর এই কারণেই উনি আমাদের লেখা পড়া র গুরুদেব । অনেকেই বলবেন, বললেন বাংলা ভাষা নিয়ে লিখেছেন আর কোথা থেকে বিদ্যাসাগরের কথা লিখছেন, ওনার কথা না বললে বাংলা ভাষা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। উনি চেয়ে ছিলেন বাঙালি সহজ সরল ভাবে নিজের মতৃভাষায় লেখা পড়া শিখুক অন্তত নিজের মাতৃভাষা লিখতে ও বলতে পারুক সহজ ভাবে, কিন্তু না আমরা আজ সেই মিষ্টি মধুর ভষা ভুলে বাংরেজ হয়ে উঠেছি। এখন কার ছেলে মেয়ে দের বলুন কেদারা বা পেয়ালা, শিশি, থালা, থলি জানি না এগুলো বাংলার কোন টি কি কলম যে পেন সেটাও বলে দিতে হয়। তার কারন শিক্ষা ব্যবস্থা ইংরেজি, আরবি, হিন্দি এগুলো যে আলাদা একটা ভাষা। আমরা যা বাড়িতে বলি বা দেখি তার একটা বাংলা আছে সেটা না শিখিয়ে শেখাই ইংরেজি গুলো আর পড়ানোর সময় বলি  cat মানে বিড়াল, cow মানে গরু আদৌ কি তাই, এগুলো একটি ভাষা থেকে আরেকটি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। বলি না cow এর বাংলা গরু, কিন্তু কখনোই উল্টটো ভেবে দেখি না, যে গরু মানে cow নয়, কিম্বা বিড়াল মানে cat নয়। বাদ দিলাম শেখার কথা, দেখবেন এখন কার ছেলে মেয়েরা একটি বাংলা বাক্য বললে তার মধ্যে দু থেকে তিন টি ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করে। বাড়িতে বাবা মায়ের সাথে কথা বলতে হলেও সেখানে থাকে ঐ তথাকথিত ইংরেজি শব্দ বন্ধু বান্ধব হলে তো কথাই নেই। অনেক বাবা এখন বেশি করে চান তাদের ছেলে মেয়েরা ইংরেজি টা ভালো করে শিখুক, লিখতে এবং বলতে, একটু টাকা পয়সা হলেই ছেলে মেয়েকে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা ইংলিশ মিডিয়ায় নামক বাংরেজি বিদ্যযালয়ে ভর্তি করা তাদের কাজ কারণ পারিবারিক ঐতিহ্য বা আভিজাত্য না হলে দেখানো যাবে না যে। এই কাণ্ড ঘটে ছিল ইংরেজ শাসক কুল বাঙালি কে কেরানি তে পরিনত করার জন্য মিশনারি দিয়ে ইংরেজি শিক্ষার ব্যাবস্থা করেছিল। পাশাপাশি তারাও ভারতীয় ভাষা শিখতে সংস্কৃত শিক্ষার ব্যযবস্থা করে ছিলেন। কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত এই রকম একটা কলেজে বিদ্যাসাগর অধ্যক্ষ হয়ে ছিলেন। সেখান ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় ইংরেজ দের জন্য লেখা পড়ারব্যবস্থা ছিল শুদ্রদের কোন অধিকার ছিল না। বিদ্যাসাগর শুদ্রদের  ওই কলেজে লেখাপড়ারসুযোগ করে দিলেন। উচ্চ বর্ণের মানুষ  রে রে  উঠল বিদ্যাসাগর একটি মাাত্র উত্তর দিয়ে ছিলেন, আপনাদের সাথে যদি ম্লেছ ইংরেজ সংস্কৃত পড়তে পারে তবে এরা বাদ কেন? তিনি বাংলাভাষার প্রসারের জন্য কি করে  ছিলেন তা আগেই লিখেছি। নিজের মাতৃভাষায় শিক্ষা ও প্রসার এবং মেয়েদের শিক্ষার জন্য জন্য ৩৫ টি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করে ছিলেন। সেই বাংলা ভাাষা আজ বিপন্ন কেন, ইংরেজ দুশো বছরের রাজত্বে কেরানি কুল তৈরি করতে নিজের মাতৃভাষা কে আমাদের শিক্ষতে বাধ্য করে ছিল যা আজও বহমান,  ওদিকেে ইসলাম শাসন ছিল, ৬০০ থেকে ৭০০ বছর তাদের ভাষা  ছিল আরবি কারও কারও উর্দুু যা তারা নিজেদের বলত, তাদের বেশ কিছু শব্দ বাংলা ভাষার সাথে মিলে মিশে গেছে, অর্থাৎ শব্দ ভাণ্ডার বেড়েছে যেমন, জল হয়ে গেছে পানী, এখন তো আবার চলভাষ এর কল্যাণে দেখাছি বাংলাদেশে বেশি করে বাঙালি যেন বাংলা ভাষার অপমৃত্যু ঘটিয়ে দিচ্ছে। অনাথ আশ্রম হয়ে গেছে এতিমখানা কারণ ওখানে তিন তালাকে বিচ্ছেদ আবার বিয়ে এবার ঐ শিশু গুলো যাবে কোথায় না অনাথ আশ্রমে 
। যাহোক বাংলাদেশের কথা বাদ যাক, একই ভাবে ফরাসি, পারসিক, পাঠান সব ভাষা থেকে ভাষা সমৃৃদ্ধ হয়েছে ইংরেজি ভাষা থেকেও, কিন্তু ইংরেজি শেখা টা বাধ্যতামূল হয়ে গেছে। যাদের আরবি ভাষা শিখতে হয়, সেই ইসলাম ধর্মের মানুষ বাংলা ভাষার জন্য আন্দোলন করছে, এর অবশ্য একটা কারণ বাঙালি ইসলাম ধর্মের মানুষ সবটাই হিন্দু বা সনাতন ধর্মের মানুষ নিজেদের ধর্ম পাল্টেছেন কেউ স্বেচ্ছায় কাউকে ভয় দেখিয়ে জোর করে ধর্মের পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছেন আবার অনেকেই সনাতন ধর্মের উচ্চ বর্ণের অত্যাচার থেকে বাঁঁচতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ছিলেন। এদের মাতৃভাষা বাংলা, একশ শতাংশ ইসলাম ধর্মের মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলেন, আরবি তারা শেখে কোরান হাদিস পড়ারজন্য বা পড়ানোর জন্য তবে এখন তাদের ধর্ম গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ করা হয়ে গেছে। আর মাতৃভাষা বাংলা বলেই তারা অতবড় আন্দোলন শুরু করেতে পেরে ছিল উর্দু ভাষি পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে যা স্বাধীনতা আন্দোলনের রূপ নিয়ে ছিল, পরে ভারতের সহায়তায় স্বাধীন বাংলাদেশের জণ্ম হয়। তাছাড়া বাংলা ভাষা কিছু কাগজ তথা সংবাদ পত্রের খবর অনুযায়ী ভারতের দ্বিতীয়। অর্থাৎ সারা ভারতে হিন্দি ভাষার পরে বেশি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলেন ।আর এখন কার দিল্লির শাসক সেই ভাষার কণ্ঠ রোধ করতে চাইছে হিন্দি ভাষা কে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে শিক্ষা ব্যাবস্থা র মধ্যে দিয়ে আরো বিভিন্ন ধরনের উপায় অবলম্বন করে হিন্দি শিখতে বাধ্য করা হচ্ছে। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার কর্মী যে গুলো অবাঙালি দ্বারা পরিচালিত তারা বিশেষ করে  এই কাজ টি করে যাচ্ছে সন্তর্পনে, এমন অনেক সংস্থার ক্রেতাসুরক্ষা আধিকারিক ফোন ধরে বলছেন আপনি হিন্দি অথবা ইংরেজি তে বলুন সে নিজে বাঙালি হলেও সেই কর্মী ও বাংলা ভাষার বদলে উক্ত দুটি ভাষার মধ্যে একটা বেছে নিতে বলছেন। এভাবে আমার মাতৃভাষা কি শেষ হয়ে যাবে, হিন্দি ইংরেজি ও অন্যান্য ভাষার মধ্যে কারণ ভারতের অনেক ভাষা হারিয়ে গেছে এ ভাবে, আমরা যদি সতর্ক না হই তা হলে, " মোদের গরব, মোদের আশা আমরি বাংলা ভাাষা,  কি যাদু বাংলা গানে গান গেয়ে দাঁড় মাঝি টানে।" যে ভাষায় লিখে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্ব কবি হয়েছেন, নোবেল প্রাইজ এনেছেন। নজরুল, সুকান্ত, শরৎচন্দ্র, আরও অনেক কৃতি বাঙালি নিজের মাতৃভাষা বাংলা কে সমৃদ্ধ করে গেছেন আসুন আমরা সবাই মিলে একসাথে  আমার আপনার প্রিয় মাতৃভাষা বাংলা কে  ষঢ়যন্ত্র কে রুখে দিই। আমরা শপথ নিই বাংলা ভাষা কে কিছুতেই ধ্বংস করতে দেব না। 

No comments:

Post a Comment

পশ্চিমবঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার সরকারি দপ্তরে শেষ চেষ্টা।

উপরের ছবি টা একটা স্কীনশট নেওয়া ছবি। ছবি টি সম্পর্কে কিছু কথা বলি তার পর অন্য কিছু কথা লেখা যাবে। ছবির দুটি অংশ উপরের অংশ একজন শিক্ষক যিনি ...