Anulekhon.blogspot.com

Wednesday, 30 September 2020

ফেসবুক বন্ধু (শুভজিৎ চক্রবর্তী) মন্তব্য ( ইসলাম জিন্দাবাদ) এর উত্তর ।

প্রিয় বন্ধু শুভজিৎ, আপনি এর আগেও আমার একটা লেখায় মন্তব্য করে ছিলেন। সেটি ছিল আমার নিজের লেখা ধর্ম ও মানবতা নিয়ে, কীভাবে ধর্ম আজ রাজনৈতিক দলের অঙ্গ হয়ে যাচ্ছে, সেটা নিয়ে লেখাটি ছিল, আপনার সেখানে মন্তব্য ছিল আমি এই ব্লগের মাধ্যমে উত্তর দিয়ে ছিলাম, আজ আবার দেখলাম আপনি আমার শেয়ার করা বামপন্থী আন্দোলনের একটা ভিডিও ফুটেজ দেখে মন্তব্য করেছেন "ইসলাম জিন্দাবাদ" সেখানে কিছু জিজ্ঞাসা চিহ্ন আছে। আমার মনে হয় আপনাকে এটা বোঝান হয়েছে, বা আপনি চার পাশে শুনেছেন, কিছু দিন বা কিছু বছর পরে ইসলাম গোটা ভারত দখল করবে হিন্দু বা সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী মানুষ থাকবে না। আপনার ঐ কথার চিন্তা যদি থাকে একটাই উত্তর আছে, দীর্ঘ 600 থেকে 700 বছর ভারত বর্ষ ইসলাম বা মুসলমানরা শাসন করেছে, সনাতন ধর্মের বিশ্বাসী মানুষ কিন্তু শেষ হয়ে যায়নি বরং এখনও ভারতে তারা সংখ্যা গরিষ্ঠ, দেশ ভাগ না হলেও তারা সংখ্যা গরিষ্ঠই থাকত, কিন্তু আপনার নেতারা নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করতে তথা ক্ষমতা দখল করতে ধর্মের নামে দাঙ্গা লাগিয়েছে, দেশ ভাগের মত জঘন্য কাজ তারা করেছে যার ফল বাঙালি জাতি কে এখনও ভুগতে হচ্ছে।আমি যদি বলি ইসলাম ধর্ম বাড়ছে আপনার দলের নীতির জন্য বিশ্বাস হবে, ইসলাম ধর্মের লোকজন বেশি ভাগটা হলো ধার্মান্তরিত হিন্দু, যাদের তথা কথিত দলিত, হরিজন, তপশীল জাতি ইত্যাদি নানা নামে ডাকা হয় এর একটাই কারণ হিন্দু ধর্মের উচ্চ বর্ণের মানুষের অত্যাচার, কলেজ পড়ুয়া রোহিত ভেমুলার কথা মনে আছে সে কোন ধর্মের মানুষ ছিল বলতে পারেন! এই কিছু দিন আগে উত্তর প্রদেশের একটি খবর ছিল একজন নিম্ন বর্ণের মানুষ ঘোড়ায় চেপেছে বলে তার উপর অকথ্য অত্যাচার নেমে এসেছে। আপনি বাংলায় বসে এগুলো বুঝতে পারবেন না, কারণ পশ্চিমবঙ্গে 34 বছর বাম শাসন ছিল জাত পাত অনেকটাই কমে গেছে। একটু অন্য রাজ্যের খবর পড়ে দেখুন, দেখবেন এখনও প্রতি দিন কীভাবে নিম্ন বর্ণের মানুষ অত্যাচারের স্বীকার হচ্ছে। এই একটা খবর দেখুন উচ্চ বর্ণের মানুষ দ্বারা নিম্ন বর্ণের একটি মেয়ে ধর্ষিত হয়েছে, কোন বিচার নেই। যেমন পশ্চিমবঙ্গে ধর্ষণের বিচার নেই, সেই রকম। ছবি টি দিলাম।
এটা বলতে পারেন, ইসলাম ধর্মের অধিকাংশ মানুষ দেশের আইনের থেকে তাদের ধর্ম কে বড় মনে করে, কারণ তাদের ধর্মীয় শিক্ষা, আর মুসলিম শরিয়ত আইন, আমিও এসবের বিরুদ্ধে কারণ এক দেশ এক আইন, ধর্মের নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকবে কেন? কিন্তু দেখুন সংবিধান যখন তৈরি করা হয়েছে, তখন এবং দেশের ক্ষমতা লোভী লোক গুলো এই ব্যবস্থা করে গেছে, ক্ষমতা তাদের কাছে খুব দরকার ছিল সঠিক চিন্তা ছিল না। ধর্মের উগ্রতা সে সব ধর্মের মধ্যে আছে, তাদের ধারণা ধর্ম দিয়ে সব কিছু করা যাবে, কিন্তু দেখুন যখন কোন বড়ো বিপদ যেমন মহামারী, আধুনিক যুদ্ধ, কঠিন ব্যাধি, এসব এসে হাজির হয় তখন বিজ্ঞান এর উপর নির্ভর করতে হয়, থালা, ঘন্টা বাজিয়ে, মোমবাতি জ্বালিয়ে, ফানুস উড়িয়ে, ফুল ছড়িয়ে, গোমুত্র পান করে রোগ বা মহামারী প্রতিরোধ করা যায় না। শুনেছেন নাকি বামপন্থীরা কোন দিন পূজো করতে বারণ করেছে, বা সাধারণ মানুষ কে ধর্ম পালনে বাধা দিয়েছেন। যে যার ধর্ম সে তার মত পালন করতে পারে, এবার বলবেন বামপন্থী হলে ঠাকুর পুজো করা যাবে না, এরকম নির্দেশ কেউ বা কোন বামপন্থী নেতা বলেছেন বলে আমার জানা নেই, আমি একজন সামান্য সমর্থক মাত্র, আমি যতদূর জানি ভারত বর্ষ বিভিন্ন ভাষা ভাষির সাথে সাথে বিভিন্ন জাতি ধর্মের বাস এখানে এই গনতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে মানুষের জন্য যতটুকু কাজ করা যায় সেই নীতি নিয়ে চলে এখান কার বামপন্থী দল গুলো, যেমন এই করোনা মহামারীর সময় কেরলের বাম সরকার সর্ব কিছু দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, ট্যাক্স ছাড়, বিদ্যুৎ বিল ছাড়, বাড়ি বাড়ি বিনামূল্য রেশন পৌঁছে দেওয়া আরও কত কি? আর আমাদের সরকার উল্টে বিদ্যুৎ মাশুল বাড়িয়ে দিয়েছে, আর রেশন সবাই কে দেবে বলে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে হাতে গোনা শাসক দলের লোকজন পেল, তা এখনও বন্ধ হয়ে গেছে। যা যা ঘোষণা করা হয়েছে, সেটা পেতে হলে নেতা দের কাটমানি দিতে হবে। আর " ইসলাম জিন্দাবাদ" বলছেন, ইমাম ভাতা, মোয়াজ্জেম ভাতা, কে শুরু করেছে, আরেকটা জানেন, রাজ্যের ঐক্যশ্রী বলে একটা প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথম শ্রেণী থেকে উচ্চ শিক্ষার পাঠরত সংখ্যালঘু ছাত্র ছাত্রীদের একটা টাকা দেওয়া হয়।পুরোহিত ভাতা দূর্গা পুজো করার টাকা, এগুলো কিন্তু বামেদের তৈরি করা নয়, আপনার দিদির তৈরি, আপনার দাদার দলের নতুন সহ সভাপতি মকুল রায়, "ইসলাম জিন্দাবাদ করতে গেছে, ছবি দিলাম দেখে নেবেন।
এনার এটাই কাজ ইনি যখন তৃণমূলে ছিলেন তখনও এই ভাবে ইসলাম জিন্দাবাদ করতে যেতেন, আর এখন এই রাজ্যে যে আজ বিজেপি কাল তৃণমূল, অর্থাৎ যেখানে গেলে বেশি চুরি করা যায় সে দিকে, জনগণের কোটি কোটি টাকা লুঠ হয়েছে, বাঙালির গায়ে আজ চোর নামের কলঙ্কের দাগ। এরা সেই, ইংরেজ আমলে, যারা ইংরেজ দের ঘুষ দিয়ে, নিজেদের কাজ তথা চুরি বজায় রাখাত সেই বাঙালি, আরেকটা ছবি দিয়ে শেষ করছি, পশ্চিমবঙ্গ থেকে মন্ত্রী করা হচ্ছে, ভোট পাবার জন্য তিনটি তিন জাতির লোক।

কি এর পরেও বলবেন বামপন্থীরা ইসলাম জিন্দাবাদ করে? ধর্ম যে যার মতো পালন করুন ধর্ম থাক ধর্মের জায়গায় আসুন ধর্মের চশমা খুলে, আসল সত্য নিয়ে নিজের সত্তা কে বাঁচিয়ে রাখি, যারা ধর্মের নামে মানুষে মানুষে হানাহানি লাগিয়ে দেয়,এবং ধর্মের নামে মানুষ খুন করে তাদের সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিই। আপনি আপনার মত ধর্ম পালন করুন, আমি আমার মতো, কারণ কোন বামপন্থী দল ধর্ম পালনে কোন দিন বাধা দেয় নি আজও দেবে না। আজ যুব সমাজের দাবি সব হাতে কাজ সব পেটে ভাত, সম কাজে সম বেতন, চাকরির বিজ্ঞাপন আছে চাকরি নেই এ জিনিস বন্ধ করতে হবে বন্ধু বেকার যুবক কাজ চায়, যে যার যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ আপনিও নিশ্চয়ই তাই চান, ধর্মের চশমা খুলে, দেখুন দেখতে পাবেন আজ বাইশ টা রাজ্যে দাদার দল ক্ষমতায় আছে কোন রাজ্য সোনা দিয়ে মোড়া হয়নি। ত্রিপুরার দিকে দেখুন দেখবেন কি অবস্থা করেছে আপনার দাদার দল, এরা বাঙালি বিদ্বেষী, আর দিদির কথা না বলাই ভালো, পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি জাতি আজ চোরের জাতিতে পরিনত করেছে এ বদনাম দূর করতে বাম ছাড়া বিকল্প নেই। কারণ চৌঁত্রিশ বছর রাজত্ব করেছে, আজ পর্যন্ত কোন নেতা মন্ত্রী কে সিবিআই জেলে বন্দি করতে পারে নি। এটাই আমার গর্ব কারণ আমি এমন একটা দলকে সমর্থন করি, যারা চোর নয়, মানুষের জন্য ভাবে, এই মহামারী কালে ক্ষমতায় না থেকেও নানা ভাবে সাহায্য করে যাচ্ছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ কে আসুন আমরা সবাই এদের পাশে থাকি, অন্তত জোর গলায় বলতে পারবেন আমার নেতা মন্ত্রীরা চোর নয়। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আবার মন্তব্য করবেন কেমন।

No comments:

Post a Comment

বাঙালি ও বর্তমান ভারত।

 (ছবিটি নেট থেকে নেওয়া, একটি স্ক্রিনশট।) স্বাধীনতার পূর্বে ভারত কীরকম ছিল, ১৯৪৭ সালে ভাগ হওয়ার পর কেমন হয়েছে। কেন ভারত ভাগ করা হয়েছিল সে ...