Anulekhon.blogspot.com

Monday, 12 August 2019

যে দেশে ধর্ম নিয়ে এতো মাতা মাতি, সে দেশে উন্নয়ন করা সম্ভব!

ধর্মের নামে যেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ আজও জমায়েত হয়, বিভিন্ন দেবতার স্থানে হত্যে দিয়ে পরে থাকে, কোন বাবা কখন তাকে আশীর্বাদ করে ফুল বেল পাতা মাদুলি দেবে। তিনি সেটা নিয়ে গিয়ে বাড়িতে রাখলে উন্নতি হবে। এরকম অলৌকিক কিছু পাওয়ার জন্য এখনও লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতিটি দেবতার স্থানে বা শ্রাবণ মাসে প্রতিটি শিব স্থানে জল ঢালতে যাচ্ছে। এসব দেখে আমার মনে হয় না যে পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছর বাম শাসন ছিল। কারণ আমি জানি, বামেদের একটি বিষয়ে প্রথম খুব প্রচার করে ছিল। ঠাকুর দেবতা বলে কিছু নেই, কিছু মানুষ, গরীব মানুষ কে প্রতি নিয়ত ঠেকানোর জন্য এই সব দেবতার নামে ব্যবসা করে। তারা এতটাই মানত যে কোন মানুষ বা সমর্থক দেবতার মন্দিরে প্রণাম করলে তাকে আর কোন দিন দলের কোন বিষয়ে অংশ নিতে বলত না। আস্তে আস্তে এই সব একটু শিথিল করা হয়, যখন দেখে পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ ধর্ম পালন করার জন্য, কোনো জমায়েতে বেশি করে মানুষ আসে, যেমন তারকেশ্বরের জল ঢালতে যাওয়া লক্ষ লক্ষ মানুষ শ্রাবণ মাসের সোমবার জমায়েত হয়ে যায়, রাস্তায় চলা দায় ট্রেনে ওঠার উপায় থাকে না। তবে এটাও ঠিক তারা যে বলতেন, ধর্মের নামে ব্যবসা, কথা টি একেবারে অমূলক না। অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি বাদ দিন, শুনেছি সেখানে ভিন্ন ভিন্ন লাইন দেওয়া হয়, প্রণামী অনুযায়ী, এখন তারকেশ্বরের মন্দিরে জল ঢালতেও টাকা লাগে, তিন চার ধরনের ভাগ করা হয়েছে। যদিও বলা হচ্ছে, মন্দিরের উন্নয়ন আর পরিষ্কার করতে এই টাকা নেওয়া হচ্ছে। সব ঠিক পরিষ্কার করতে কত টাকা লাগে, শুনলাম একটা সোমবার ১৫ থেকে কুড়ি লক্ষ লোক হয়ে ছিল। যদি প্রণামী বা উন্নয়ন বা পরিষ্কার করতে টাকা বেশি দিলে ভালো করে এবং তাড়াতাড়ি দেবতার দর্শন মেলে বা বাবার মাথায় সরাসরি জল ঢালতে পারা যায়। বেশি করে টাকা দিলে দেবতা, বা শিব বাড়িতে চলে আসেন,তাহলে এতো ঝামেলা করে জল তুলে ২৮ থেকে ৩০ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে জল ঢালতে যাওয়ার কি দরকার। যার টাকা বেশি তিনি বাড়িতে বসে জল ঢালতে পারবেন। এই জন্যই আমি বলছি, গরীবের দারিদ্র নিয়ে যত দিন না এই উপহাস করা বন্ধ হবে। সরকারের উপঢৌকন পাবে বলে বসে থাকবে, ততদিন পর্যন্ত এই ধরনের মানুষ আরেকটা মানুষ কে ভুল বুঝিয়ে ঠাকুরের নামে অর্থ উপার্জন করে যাবে। দেবতা মানুষের মনের জোর বাড়ায়। কখনও কিছু অলৌকিক কিছু করার ক্ষমতা নেই। দূর্বল মানুষ মনের জোর বাড়াতে দেবতার স্মরণ করে বা ডাকে। যে দিন সমাজে সবল দ্বারা দূর্বলের উপর অত্যাচার বন্ধ হবে। মানুষ বুঝতে শিখবে তাকে শোষণ করছে, আরেক টা মানুষ, মানুষ মানুষকে ভিক্ষারী বানিয়ে রেখেছে, কোন দেবতা নয়। গরীব খেটে খাওয়া মানুষ কে ঠকানো এখন খুব বেড়ে গিয়েছে। গরীব  খেটে খাওয়া মানুষ কে বোঝানো হচ্ছে, বা প্রচার করা হচ্ছে বা অতীতে হয়েছে। তোমাকে ঠাকুর গরীব করে রেখেছে, আর শোষণ করতে তাদের উপর নিপীড়ন করে যাচ্ছে, তখনও বলা হয়েছে, ঠাকুর করছে, তুমি ঠাকুর কে ডেকে যাও সব সমস্যার সমাধান হবে। সেই কথাটি আবারও লিখছি, মানুষ মানুষকে শোষণ করে। দেবতা বা ঠাকুর পুজো মনের সাময়িক শান্তি আনে, বা মনের জোর বাড়ে।   গরীব খেটে খাওয়া মানুষের কাছে আবেদন আসুন আপনাকে যারা বঞ্চিত করে, টাকার পাহাড় করছে, তিনশো টাকার মজুর আজ তিনশো কোটি টাকার মালিক, এক রংয়ের দোকান দার রাজ প্রাসাদ তৈরি করেছে। আর আপনার সরকারি আবাসনের প্রকল্পের টাকা পাওয়ার কথা কিন্তু আপনাকে বঞ্চিত করে রেখেছে। বিভিন্ন অজুহাতে তাদের বিরুদ্ধে সমবেত হই। নিজের অধিকার ছিনিয়ে আনি, অর্থাৎ ঠাকুর দেবতাও থাক আর যারা ঠাকুর দেবতার দোহাই দিয়ে আপনার অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই জারি থাক। 

No comments:

Post a Comment

বাঙালি ও বর্তমান ভারত।

 (ছবিটি নেট থেকে নেওয়া, একটি স্ক্রিনশট।) স্বাধীনতার পূর্বে ভারত কীরকম ছিল, ১৯৪৭ সালে ভাগ হওয়ার পর কেমন হয়েছে। কেন ভারত ভাগ করা হয়েছিল সে ...