স্বাধীনতার সত্তর বছর পরেও আমরা পরাধীন। স্বাধীনতা এসেছে, ধর্মের নামে দেশ ভাগ করে, এটাই বর্তমান ভারতের মূল সমস্যা, অর্থাৎ ধর্ম ছাড়া আর কোন সমস্যা নেই। শাসকের চোখ রাঙানি বন্ধ হয়নি। ইংরেজ বা ব্রিটিশ ১৭৫৭ সালে নবাব সিরাজ উদ্দৌলা কে পরাজিত করে, বাংলায়, শাসন ভার দেওয়া হয় মিরজাফর কে কিন্তু বেইমান মির্জাফর কে ইংরেজরা বিশ্বাস করতে পারেনি। অনেক টাকার বিনিময়ে তারা শাসন ভার তুলে দেন, মীরকাশেম কে, কিন্তু ইংরেজ দের চাহিদা তিনি পূরণ করতে গিয়ে প্রজাদের উপর নানা কর বসাতে অস্বীকার করেন। ইংরেজ দের সাথে যুদ্ধে তিনি পরাজিত হন, সেই সময় থেকে বাংলার শাসক হয়ে ওঠে ব্রিটিশ বেনিয়া, কবির ভাষায় "শর্বরী পোহালে, বণিকের মানদণ্ড /দেখা দিল রাজদণ্ড রূপে" শুরু হলো ব্যবসার সাথে সাথে কর আদায়, টাকায় টাকা। বাংলার ক্ষুদ্র বা ব্যবসা ধ্বংস করে নিজেদের আমদানি করা জিনিসের চড়া দামে বিক্রি। বাংলার ব্যবসা কৃষি কাজ, কৃষিজ শিল্প ধ্বংস করে নিজেদের মতো করে আধুনিক কারখানা তৈরি করা। উনিশ শতকের মাঝামাঝি থেকে এদের সাথে যোগ দিয়েছিলেন মেরেঠের কিছু ব্যবসায়ী। ব্রিটিশ সরকারকে তুষ্ট করে তাদের মতো করে ব্যবসা শুরু করে ছিলেন, এই মারোয়ারি সম্প্রদায়ের মানুষ। এদের প্রতিনিধি হিসেবে বিশ শতকের গোড়ার দিকে ব্রিটিশদের সাথে সমঝোতা করতে যোগ দেন দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বিতাড়িত মানুষ মোহন দাস করম চাঁদ গান্ধী। তিনি এদের ব্যবসার কোনো ক্ষতি হলে সহ্য করতে পারতেন না। সেই জন্যই আইন অমান্য করার ডাক দিয়ে ডাণ্ডি অভিযান ও স্বদেশী আন্দোলন, বিদেশি জিনিসের বদলে দেশের জিনিস মানুষ যাতে কেনে সেই জন্যই বিলেতি দ্রব্য বয়কট করে ছিলেন, যাতে মারোয়ারি সম্প্রদায়ের মানুষ লবণ তৈরি করতে পারে এবং অন্যান্য জিনিসের ব্যবসা করতে পারে। বাঙালিজাতি হুহুজুগে মেতে এর কথায় আন্দোলন করতে যেত জেলও যেত শাস্তি পেত। আমি যতদূর জানি গান্ধী উকিল ছিলেন। কোন দিন কোন স্বাধীনতা সংগ্রামীর জন্য ব্রিটিশ ভারতের আদালতে সওয়াল করেনি। মাঝে মাঝে ইংরেজ দের সাথে গোল টেবিল বৈঠক করতেন। ব্রিটিশ দেখে ছিল ভারতে যদি শাসন করতে হয় তবে, এই লোকটা কে জীবিত রাখতে হবে। তাই যখনই তার প্রাণ সংশয় দেখা দিত, জেলে ভরে দিত। বাঙালি জাতির আন্দোলন কে ইনি সহ্য করতে পারতেন না। আমার মনে হয়, ১৯০৫ সালে বঙ্গ তথা বাংলা ভাগ হয়ে যেত, যদি এই মহান ব্যক্তি এই দেশে থাকতেন। বঙ্গ ভঙ্গ আন্দোলন আর হতো না। ইনি মেরেঠের সমর্থক হয়েও বিহারী বা উত্তর প্রদেশের হিন্দি ভাষি মানুষ কে খুব পছন্দ করতেন। কারণ এরা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে কোন আন্দোলন করত না, উল্টে এই হিন্দি ভাষী মানুষ ইংরেজ দের সাহায্য করে গেছেন সর্বদা সেই কারণেই এদের খুব ভালো লাগত গান্ধীর। এই মহান ব্যক্তি বাঙালি, শিখ আর মারাঠী দের দেখতে পারতেন না। তার মূল কারণ এই তিন জাতি স্বাধীন চেতা পরাধীন তার গ্লানি থেকে দেশ কে মুক্ত করতে নিজের জীবন বাজি রেখে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে, হাসতে হাসতে ফাঁসির মঞ্চে উঠে নিজের জীবন বিসর্জন দিতে পারে।আরকে দিকে এই হিন্দি ভাষী মানুষ, শ্রমিকের কাজ করতে পটু, অর্থাৎ দাসত্ব করতে পারে। সেই কারণেই এদের কদর বেশি, এখন দেখুন কোনো কোনো মারোয়ারি সংস্থা লোক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলে হিন্দি ভাষী দের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বাংলায় থেকে ব্যবসা করবে, কিন্তু বাঙালি শ্রমিক পছন্দ নয়। সুকৌশলে বাঙালি বিদ্বেষ এখনো আছে, আবার বর্তমানে সেই মারোয়ারির বন্ধু লোক ক্ষমতায়, কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী সভাটা একটু লক্ষ্য করুন, তাহলেই বুঝতে পারবেন। এদের লক্ষ্য আবার বাঙালি জাতি কে ভিটে ছাড়া করা, সেই জন্য নানা ছলনার আশ্রয় কখনো নেতাজী প্রীতি যদি ওতই প্রীতি তবে হিন্দি বলয়ে ইতিহাসে যে বাঙালি জাতির ইতিহাস পড়ান হয় সেটা পাল্টে সঠিক ইতিহাস পড়ানো শুরু হয় নি কেন? শ্যমাপ্রসাদ মুখার্জি কথা বলেছেন। তাহলে তার মৃত্যুর সঠিক তদন্ত হলো না কেন? বাঙালি জাতি টি কে সম্পূর্ণ ধ্বংস না করা পর্যন্ত এই মারোয়ারির গোষ্ঠী প্রতিনিধি রা ছাড়বে না। তাই যত রকম ভাবে পারা যায় তার চেষ্টা করে যাচ্ছে, কখনো হিন্দি ভাষা কে চাপিয়ে দিয়ে, হিন্দু মুসলমানে দাঙ্গা লাগিয়ে, এবিষয়ে মুসলমান রা এগিয়ে দাঙ্গা মানুষ খুন করতে খুব পারে। এই জন্য আজ বাংলাদেশ হিন্দু শুন্য হতে চলেছে। কাদের দয়া না গান্ধীর আর নেহরুর দয়ায়। আর এই সব দল কে আমরা ভোট দিয়ে জিতিয়ে আনছি যাতে বাংলা তথা পশ্চিমবঙ্গের সর্বনাশ করতে পারে। আসামে বাংলাদেশী তাড়ানোর জন্য NRC অভিযান প্রায় চল্লিশ লক্ষ্য হিন্দু ও মুসলমান আজ ভিটে ছাড়ার মুখে। এবার পশ্চিমবঙ্গের পালা, তার জন্যে কোমর বেঁধে নেমেছে, পরাধীন ভারতের আইন আজ লোকসভায় পাশ করে নিয়েছেন, বিরোধীতা করলেই জেল, আর পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করতে পারলে সোনায় সোহাগা, গত লোকসভা নির্বাচনে অনেকটা এগিয়ে গেছে সে বিষয়ে, আর এই দল কে ডেকে আনছে দিদি। সিঙ্গুর থেকে টাটা কারখানা তাড়িয়ে গুজরাতে পাঠানো। মুখ্যমন্ত্রী মোদীজি কে ফুল পাঠানো, এখন তো গোপন আঁতাত যাতে সি বি আই না ধরে। সে টাকা দিয়ে হোক আর ফুল মিষ্টি আর আম পাঠিয়ে হোক। বি জে পি কে এই রাজ্যে ক্ষমতায় আনার মূল কারিগর আমাদের দিদি। সেই কারণেই বাঙালি জাতির মধ্যে নানা ভাবে বিভাজন আগে থেকেই তৈরি করা আছে। হিন্দু মুসলমান তো আছেই তার পরেও, ঘটি, বাঙাল । আর এই রাজ্যের মানুষ বাঙাল তাড়ানোর জন্য বহু দিন ধরেই চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাদের সে ইচ্ছা মনে হয় দিদি পুরণ করে দেবেন, বি জে পি কে ডেকে এনে। সুকৌশলে বাঙালি জাতি কে ধ্বংস করে দিতে চক্রান্ত শুরু হয়েছিল স্বাধীনতার আগে থেকেই, সেটা কাজে লাগিয়ে ছিল, ভারতের স্বাধীনতার সময়, সে আশ মেটেনি এখনো বাঙালি জাতি তাদের গরিমা ধরে রাখতে পেরেছে। তাহলে তাদের আবার দেশ ছাড়া করা হোক, ওদিকে বাংলাদেশের মুসলমান তথা শান্তির ধর্মের লোকজন অত্যাচার করে মেরে তাড়িয়ে দিচ্ছে, এপারে NRC আছে, আর স্বাধীনতার সময় থেকে তৈরি করা একটা বিভাজন ওরা বাঙাল।
Anulekhon.blogspot.com
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
বাঙালি ও বর্তমান ভারত।
(ছবিটি নেট থেকে নেওয়া, একটি স্ক্রিনশট।) স্বাধীনতার পূর্বে ভারত কীরকম ছিল, ১৯৪৭ সালে ভাগ হওয়ার পর কেমন হয়েছে। কেন ভারত ভাগ করা হয়েছিল সে ...

-
সরস্বতী পুজোর পদ্ধতি, পরপর যা করতে হবে।১)আচমন ২)বিষ্ণু স্মরণ ৩)স্বত্ত্বি বাচন ৪) স্বত্ত্বি সূক্ত ৫) সাক্ষ্য মন্ত্র ৬) বরণ ৭) সংকল্প ৮) স...
-
আমি এর আগে একটি ব্লগে লিখেছি, দুর্গা যষ্টী পূজার মন্ত্র ।এখানে বলি আমি পণ্ডিত নই, বিভিন্ন ধরনের বই পড়ে, আর দু একজন ব্রাহ্মণের সাথে কাজ ...
-
ছবি টি কীসের বা কোন প্রাণীর নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না। মানুষের প্রথম পোষ মানা প্রথম প্রাণী, হয়তো অনেকেই পড়ে বলবেন এবার নতুন কী এতো আমরা স...
No comments:
Post a Comment