ভারত একটা বিশাল দেশ, বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল দেশ। বিভিন্ন ভাষাভাষী জাতি গোষ্ঠীর বাস তাদের বাম পন্থায় আনা কি সম্ভব? আমি যতদূর জানি বাম পন্থী দল গুলো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু সম্ভব হচ্ছে না, কেবল এই বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠী ও ভাষার জন্য। আমি যতদূর জানি ভারতে বাম পন্থা চর্চা শুরু হয়েছে, পরাধীন থাকার সময় থেকে, কিন্তু আজ পর্যন্ত ভারতে সেই অর্থে বামপন্থীরা সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারে নি রাশিয়া বা চীনের মতো। গনন্তান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে থেকে যে টুকু হয় কিছু বামপন্থী দল তার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিছু উগ্র বামপন্থী আবার রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলন করে যাচ্ছে। আগেই বলেছি ভারত বর্ষ বিভিন্ন ভাষাভাষী ও জাতি গোষ্ঠীর বাস এই চেষ্টা করে কোনো লাভ নেই। গনন্তান্ত্রিক ব্যবস্থার মাধ্যমে যতটা সম্ভব করা যায় সেটাই ভালো। একবার সুযোগ এসে ছিল জ্যোতি বসু কে প্রধানমন্ত্রী হবার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তার দল সেটা মেনে নেয়নি। এই নিয়ে তিনি বলেছিলেন এটা ঐতিহাসিক ভুল। এই গনন্তান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে তিন টি রাজ্যের ক্ষমতায় আসা ছাড়া আর সে ভাবে কিছু হয়নি। কোন কোন রাজ্যে হয়তো দু একজন এম পি /এম এল এ আছে। এখন আবার কেরল ছাড়া অসত্বিত নেই, কারণ আছে বামেদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা একরকম আবার ত্রিপুরার এক রকম, আমি মনে করি পশ্চিম বঙ্গ থেকে বামেদের চলে যাওয়ার মূল কারণ ছিল, উগ্র ডান পন্থার ধ্বংসাত্বক আন্দোলন যেটা প্রতিহত করতে পারে নি, তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার বা তার দল। বেশিরভাগ কর্মী সমর্থক প্রতিষ্ঠান মুখী বা সরকার মুখী হয়ে পড়েছিল । আমাদের সরকার সব ঠিক করে দেবে, আস্তে আস্তে সমস্ত গন সংগঠনের ক্ষয় ধরে ছিল। নীচু স্তরের কর্মী সমর্থকদের ধমকে বসিয়ে দেওয়া, তাদের গুরুত্ব না দিয়ে নিজের মতো কাজ করে যাওয়ার ফলে, আর নেতৃত্বের জনগণের সাথে না মেশা গনসংগঠন গুলো কে গুরুত্ব না দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে পড়েছিল । এখন যা পরিস্থিতি তাতে করে এই উগ ডান পন্থী দল একটা বিশেষ ধর্মের মানুষ কে বিভিন্ন উপঢৌকন দিয়ে ক্ষমতায় এসে ছিল। আর ক্ষমতায় থাকতেও চাইছে, এবার সাধারণ মানুষ নিজেদের রক্ষা করতে এবং নিজের বেঁচে থাকার অধিকার রক্ষা করতে আরও একটি উগ্র ডান পন্থী দল কে ভোট দিয়েছে। আরেক টি কারণ দিনের পর দিন বামপন্থীরা পিছিয়ে পরছে, সমাজের বিভিন্ন অনুষ্ঠান থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখে, অনেকে উগ্র নাস্তিক হতে গিয়ে আরো ক্ষতি করে দিয়েছেন। কারণ সমাজ ব্যবস্থায় সেই পরিবর্তন বামেরা আনতে পারে নি। মানুষের সব সমস্যার সমাধান করতে পারে নি,সব মানুষের তিন টি মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারেনি। তার জন্যে মানুষ ধর্ম বা দেবতার পূজা পাটের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে সে ভাবে নাস্তিকতা প্রচার করা হয়নি। আর দলের নেতা কর্মীরা উগ্র নাস্তিক হওয়ার কারণে এদের সাথে মিশতে পারেনি। শেষের দিকে এটা বেশি হয়েছিল। সাধারণ মানুষ কে তুচ্ছ জ্ঞান করা, আত্ম অহংকার মুখের ভাষা মানুষের কাজ করে না দেওয়া সরকারি অফিসে গেলে দিনের পর দিন ঘোরান। নতুন করে আধুনিক কল কারখানা না হওয়ায় বেকার সমস্যা বেড়ে যাওয়া। ভারতে বাম আসা কোন দিন সম্ভব হবে না, বামপন্থীরা লড়াই আন্দোলন করে কোন কোন রাজ্যে ভালো মিটিং মিছিল করে, কিন্তু ভোটে বা নির্বাচনে প্রার্থী দেয় না। নির্বাচনে প্রার্থী দিতে হলে খরচ করতে হবে, হয়তো টাকার অভাব কারণ এই বামপন্থী দল গুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কর্পোরেট সংস্থা গুলো কে এড়িয়ে যায়। আমি মনে করি বামপন্থীরা সারা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বা কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতায় এলে দেশের এই উগ্র ডান পন্থা অনেকটাই পিছিয়ে পড়বে। এ বিষয়ে অনেকে মনে করেন কংগ্রেস কম সাম্প্রদায়িক দল, আমার মতে কংগ্রেস একটি ভীষণ সাম্প্রদায়িক দল, ধর্মের নামে দেশ ভাগ করার মূল করিগর। এতটা ক্ষমতা লোভী যে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু এদের কাছে কিছু না। ধর্মের নামে দেশ ভাগ করে ক্ষমতা দখল ও চল্লিশ পঞ্চাশ বছর ভারত শাসন ক্ষমতা একটি পরিবারের সদস্যদের হাতে, এরা ক্ষমতা ছাড়া আর কিছু জানে না। পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতি ঠিক তাই, আমি আর আমার পরিবারের লোকজন দিনের পর দিন কোটি কোটি টাকার মালিক হব । কোন স্থায়ী কিছু না করে আর সাধারণ মানুষ থেকে সরকারি কর্মী সবাই কে আমি ভিক্ষা দেব, আমার ক্ষমতা চাই। দাম্ভিক অত্যচারি শাসক আজ পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতা দখল করে রেখেছে। মানুষ খুন, দাঙ্গা লাগিয়ে, যেমন করে হোক ক্ষমতা চাই, জোর করে ভোট না দিলে মার। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে উন্নয়ন করেও তিনি সাধারণ মানুষ কে বিশ্বাস করতে পারছেন না। এই দম্ভ অহংকারি শাসক, যে নিজের ছাড়া আর কিছু বোঝে না। এরা মিথ্যে কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করে ক্ষমতা দখল করে, মানুষের সর্বনাশ করে ভারত বর্ষের আজ সেই অবস্থা। যুব সমাজ কে বাম পন্থায় আনতে হলে, আরও নিবিড় প্রচার এবং তাদের নেতৃত্বের দায়িত্ব দিতে বা নিতে হবে। তবে বামপন্থী দল গুলো এগিয়ে যাবে, যেমন কানহাইয়া কুমার উঠে এসেছে, এভাবে নব যুবক দের দায়িত্ব নিতে হবে। বয়স হলে পাশে সরে গিয়ে যুবক দের পদ ছেড়ে দিতে হবে। তবেই ঐ কথা গুলো প্রাসঙ্গিক, না হলে চিরকাল স্বপ্ন থেকে যাবে ভারতে বাম পন্থা আসবে।
Anulekhon.blogspot.com
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
বাঙালি ও বর্তমান ভারত।
(ছবিটি নেট থেকে নেওয়া, একটি স্ক্রিনশট।) স্বাধীনতার পূর্বে ভারত কীরকম ছিল, ১৯৪৭ সালে ভাগ হওয়ার পর কেমন হয়েছে। কেন ভারত ভাগ করা হয়েছিল সে ...

-
সরস্বতী পুজোর পদ্ধতি, পরপর যা করতে হবে।১)আচমন ২)বিষ্ণু স্মরণ ৩)স্বত্ত্বি বাচন ৪) স্বত্ত্বি সূক্ত ৫) সাক্ষ্য মন্ত্র ৬) বরণ ৭) সংকল্প ৮) স...
-
আমি এর আগে একটি ব্লগে লিখেছি, দুর্গা যষ্টী পূজার মন্ত্র ।এখানে বলি আমি পণ্ডিত নই, বিভিন্ন ধরনের বই পড়ে, আর দু একজন ব্রাহ্মণের সাথে কাজ ...
-
ছবি টি কীসের বা কোন প্রাণীর নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না। মানুষের প্রথম পোষ মানা প্রথম প্রাণী, হয়তো অনেকেই পড়ে বলবেন এবার নতুন কী এতো আমরা স...
No comments:
Post a Comment