Anulekhon.blogspot.com

Thursday, 18 April 2019

ধর্ম ও মানব সভ্যতা।

আমি যতদূর ইতিহাস জানি, আদীম কালে মানুষ যখন আস্তে আস্তে জোট বদ্ধ হয়ে বাস করতে শুরু করেছে, তারা বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঘটনা কে যেমন বন্যা, দাবানল, পশু ও পাখির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে ও নানা জায়গায় ঘুরে ঘুরে বেড়িয়েছে। মানুষ যত প্রকৃতির এই সব ঘটনা কে ভয় খেয়েছে, আস্তে আস্তে তাদের একটি দেবতা রূপে পূজা করে এসেছে  কেবল মাত্র প্রাকৃতিক ঘটনা নয় বেশ কিছু রোগও এর মধ্যে পরে, সেই সকল রোগের এক একটা দেবতা এসেছে, যেমন জলের দেবতা বরুণ, বজ্রপাত ঘটনা তার জন্যে ইন্দ্র শ্মশানে ভূত প্রেত এদের জন্যে শিব, সাপের কামড় থেকে বাঁচতে মনসা বসন্ত রোগ মা শীতলা, খোস পাঁচরা জন্য ঘেন্টু, শক্তি আরাধনা যে প্রথম প্রথম গোষ্ঠী বা দল হতো মায়ের নামে। সেই কারণেই মাতৃরূপী শক্তির আরাধনা, আর বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ থামাতেও এক গোষ্ঠী অন্য গোষ্ঠীর পালন করা শুরু করে, সনাতন ধর্ম শুরু হয়েছিল। আমি যতদূর পড়েছি, শুরুতে পৃথিবীর সর্বত্র বিভিন্ন দেব দেবীর পূজার প্রচলন ছিল, তবে তাদের নাম আকার ছিল চেহারা ছিল বিভিন্ন ধরনের, আর এই সব দেবতার পূজা যারা করত তারা বিভিন্ন যাদু দেখিয়ে ক্ষমতা দখল করত, এবং অন্য দূর্বল গোষ্ঠীর মানুষের উপর অত্যাচার শুরু করত পূজার নামে বিভিন্ন ভাবে নানা রকম জিনিস পত্র আদায় করত। এই অত্যাচার যখন চরমে ওঠে তখন কিছু মানুষ মূর্তি পূজা থেকে বেড়িয়ে এসে নতুন ধর্ম দিয়ে মানুষ কে এক জোট করতে লাগল। ভারতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বৌদ্ধ ধর্ম, জৈন ধর্ম, শিখ ধর্ম, ইসলাম ধর্ম ভারতে এসেছে, ইসলাম ধর্মের লোক বা রাজা বা সুলতান রা ভারত দখল করে রাজত্ব কায়েম করার পর। সনাতন ধর্মের কঠোরতা শুরু থেকেই বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীতে বিভক্ত, এই সব গোষ্ঠী কে এক করতে, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভারতে বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন ধর্মের প্রসার সম্প্রতি পাঁচশ থেকে সাড়ে পাঁচ শ বছর আগে বৈষ্ণব ধর্মের প্রচার, তাতেও সনাতন ধর্মের গোষ্ঠী বা জাতির মধ্যে একতা আসেনি। উচ্চ বর্ণের মানুুষ নিম্ন বর্ণের মানুুষ কে প্রতিনিয়ত ছোট করে দেখার জন্য, এবং তাদের উপর নানা অত্যাচার নামিয়ে আনা, অচ্ছুৎ করে রাখা এসব কারণে ভারতে ইসলাম ধর্মের প্রসার ঘটেছে। সনাতন ধর্ম যদি এখনও এদের মানুষের মতো বাঁচার অধিকার না দেয়, তবে অচিরেই ভারত থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে সনাতন ধর্ম। কারণ আমি দেখেছি ইসলাম ধর্ম প্রচারের পন্থা বেশি করে সন্তান উৎপাদন, আর বর্ণ ও নিম্ন বর্ণের হিন্দুরা অনেকে স্বেচ্ছায় আবার ভয়ে বা জোর করে তাদের ধর্ম বদলে বাধ্য করা হচ্ছে । ভারত স্বাধীনতার সময় ভারত ভাগ হয়েছিল, ধর্মের ভিত্তিতে, পাকিস্তানের দু অংশ পূর্ব ও পশ্চিম দু দিকে তাকিয়ে দেখুন, সেই সময় যা হিন্দু ছিল আজ তার অর্ধেক নেই, কিন্তু হিন্দুস্তান বা ভারতে স্বাধীনতার সময় যা ইসলাম ধর্মের মানুষ ছিলেন তার থেকে বেড়েছে। আজ এদের জন্য ভারতের কৃষি জমির পরিমাণ কমছে, ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে, আর কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি আইন যা কিছু সব হিন্দুদের জন্য, তাদের জন্য বা সবার জন্য যে সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেখানে ইসলাম ধর্মের ছেলে মেয়ে কম। আমি বিভিন্ন পত্রিকা খবরের কাগজ পত্র পড়ে যা জানি, তাতে করে ঐ সব ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অন্য ধর্মের প্রতি ঘৃণা করতে শেখানো হয়। অন্য ধর্ম কে কীভাবে ধ্বংস করতে হবে সেটা শেখানো হয়। এই কারণে ভারত আজ শিক্ষায় পিছিয়ে, আধুনিক টেকনোলজির শিক্ষা বা বিজ্ঞান শিক্ষা এরা বিশ্বাস করে না, এদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক মানুষ এসব বিশ্বাস করে । পূর্ব পাকিস্তান এখন বাংলা দেশ সে ভারতের সহায়তায় পশ্চিম পাকিস্তান থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাধীন দেশে, সেখানে প্রতি নিয়ত হিন্দু ধর্মের লোক কমছে, ভারত ভাগ করে স্বাধীনতার সময় সেখানে যে হিন্দুরা বাস করতেন এখন সেটা অর্ধেক হয়ে গেছে। স্বেচ্ছায় বা তাদের জোর করে ধর্ম পাল্টাতে বাধ্য করা হচ্ছে, না শুনলে প্রাণে মেরে ফেলা, তারা নিজ ভূমে পরবাসী।আমি আগেই বলেছি ইসলাম ধর্ম অপর ধর্ম কে সহ্য করতে পারে না, এই ধর্ম মুখে বলে শান্তির কথা, কিন্তু পৃথিবীর যত খুন খারাপি উগ্রপন্থী কাজ সবের মধ্য মনি এই ধর্মের মানুষ। আমি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পত্রিকা পড়ে যে টুকু জেনেছি তাতে পৃথিবীর মধ্যে যত অপরাধ ঘটে তার মধ্যে অপরাধীর সংখ্যা একশ জনে নব্বই জন ইসলাম ধর্মের মানুষ।আমার মনে হয় ধর্মীয় শিক্ষা ব্যবস্থা এটাই সেখানো হয়, তুমি খেতে পাও আর না পাও অপর ধর্ম কে ধ্বংস করাই তোমার কাজ। ভারত বা বাংলাদেশে বেশিরভাগ ইসলাম ধর্মের মানুষের পূর্ব পুরুষ হিন্দু ছিল, স্বেচ্ছায় হোক আর জোর করে হোক তাদের ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। আমি ইতিহাসে পড়েছি নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ হিন্দু ব্রাহ্মণ ছিলেন, তিনি সমাজ দ্বারা অত্যাচারিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ছিলেন, পরে বাংলা বিহার উড়িষ্যার নবাব হয়ে ছিলেন। আজ তার নাম অনুসারে মুর্শিদাবাদ জেলা। আমাদের দেশে স্বাধীনতার পর থেকেই ধর্মকে হাতিয়ার করা হয়েছে, তখন কংগ্রেস নেতারা মুখে না বললেও
ধর্ম নিয়ে দেশ ভাগের নায়ক তারা, যিনি এই বিভাজন বন্ধ করতে পারতেন, সেই বীর স্বাধীনতা যুদ্ধের নায়ক নেতাজী কে ব্রিটিশদের সাথে মিলে যুদ্ধ অপরাধী ঘোষণা করে দেশে ঢুকতে না দেওয়া, সেই জন্য আমি দেখি যে ভারতের প্রতিটি রাজনৈতিক দল পরোক্ষ ভাবে বা প্রত্যক্ষ ভাবে এই ইসলাম ধর্মের মানুষকে বা হিন্দু ধর্মের মানুষকে ভোটের তাস রূপে ব্যবহার করে আসছে। নেতারা মুখে এক কথা বলে, আর নিজের আখের গোছাতে ভোটের সময় ধর্মের জিগির তোলেন। 

No comments:

Post a Comment

বাঙালি ও বর্তমান ভারত।

 (ছবিটি নেট থেকে নেওয়া, একটি স্ক্রিনশট।) স্বাধীনতার পূর্বে ভারত কীরকম ছিল, ১৯৪৭ সালে ভাগ হওয়ার পর কেমন হয়েছে। কেন ভারত ভাগ করা হয়েছিল সে ...