গত ২০১১ সালের পর থেকে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন টা যেন প্রহসনে পরিনত হয়েছে। ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচন কমিশন কেসে করে নির্বাচন করে। তিনি অবসর নেওয়ার পরে নির্বাচন কমিশন শাসক দলের আখড়ায় পরিনত হয়েছে।জনগণ এই দিন দেখার জন্য পরিবর্তন করে ছিল, প্রতিটি নির্বাচন মানে খুন খারাপি।যে কেউ পুলিশের পোশাক পরে ভোট পাহারা দিতে নেমে পড়ছে। শাসক দল যেন তেন প্রকারে যে কোন ভোটে জিততে হবে, ভয় দেখিয়ে হোক আর মানুষ খুন করে হোক এটাই আজ পশ্চিমবঙ্গের ভোটের ছবি। আজ পর্যন্ত কোন নেতা মন্ত্রী শান্তির কথা বলল না। নেতা মন্ত্রী রা একটাই কথা বলেন আমার এতো গুলো আসন চাই, পচা ভাগারের মাংস আর বোতল বোতল মদ খেয়ে, কিছু আবার তোলার ভাগ পাবেন এই আশায় নেতা মন্ত্রী দের কথায় যেমন করে হোক জেতানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন।বর্তমান শাসক এতো রকম শ্রী এতো রাস্তা আলো করেও জনগণ কে ভয় করছে, তার মূল কারণ নেতা মন্ত্রী দের গত পাঁচ বছরে টাকার পাহাড় জমান, যদি একটু ভালো করে খেয়াল রাখেন, দেখবেন প্রতিটি সরকারি দফতরে উন্নয়নের টাকার কাট মানি আছে। গত ২০০৬ সালের পর বাম সরকার এগুলো বন্ধ করতে চেষ্টা করে ছিল। মৌচাকে ঢিল মারা গোছের হয়ে গিয়েছিল। সেই কারণেই পুলিশ প্রশাসন অফিসার প্রত্যেকে বিরোধী হয়ে বামফ্রন্ট সরকার কে সরিয়ে ছিল, এদের সাথে যোগ হয়েছিল বর্তমান শাসক দল, যারা সেই সময় থেকেই পুলিশ প্রশাসনের উপর নানান আক্রমণ করতে শুরু করে, আর ও দিকে বাম সরকার থানায় থানায় কালী পুজোর নামে চাঁদা তোলা, ডাক মাস্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, ঘুষ খোর অফিসার দের সরিয়ে দেওয়া, এসব করতে গিয়ে, আর বিরোধী দলের আন্দোলন জোর দার ছিল, তারাও এসব নিয়ে কথা বলত কীভাবে মানুষের সেবা করবে সে সব প্রতিশ্রুতির বন্যা বয়ে যেত। পুলিশকে ভয় দেখানো মার গালাগালি থানায় আক্রমণ সব হতো। বর্তমান শাসক দল বিরোধী থাকা কালে যা করেছে বা বলেছে এখন তার উল্টো দিকে হাঁটছে, এখন ঘুষখোর তোলাবাজ সরকারি তোলা বাজ কাট মানি যে সরকারী কাজ সে রাস্তা তৈরি থেকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এমনকি তুচ্ছ কাজেও কাট মানি, বাচ্চাদের মি ডে মিল, পোশাক, সবেতেই কাট মানি। হুগলির তারকেশ্বরের সরকারি সভায় মাননীয়া বলছেন, কাট মানি একা নিলে হবে, বাম আমলে যেটা ছিল গোপন উনি সেটা প্রকাশ করে দিলেন। আগে থানায় ডাক মাস্টার থাক তো এখন সিভিক পুলিশ আছে। কিছু দিন বাদে এই সিভিক পুলিশ বাড়িতে গিয়ে টাকা তুলবে। আমাদের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এসব বন্ধ করতে চেষ্টা করে ছিলেন। পদস্থ সরকারি কর্মীদের অনেকে মেনে নিতে পারে নি, সেই কারণেই বাম সরকারের পতন ঘটে, কারখানা গুলো গড়ে উঠলে, তথ্য প্রযুক্তি কেন্দ্র বা কেমিক্যাল হাব তৈরি হলে অনেক বেকার ছেলে কাজ পেত, তাহলে বামফ্রন্ট সরকার আরও কয়েক বছর পশ্চিম বঙ্গে থেকে যেতে পারে। সে কারণেই সরকারি কর্মীদের বেশ কিছু অংশ, বিরোধী আন্দোলন কে গোপনে সমর্থন করে, না হলে নন্দীগ্রামে গুলি করে খুন হলো তার সি বি আই তদন্ত হলো, রিপোর্ট জমা পড়ল তৎকালীন বিরোধী বর্তমানে শাসক দলের কাছে, এক জন ধরা পড়ল না, কিম্বা ঐ রিপোর্ট প্রকাশ পেল না, তখন যা বলা হয়েছিল, সেটা সত্যি না মিথ্যে কেউ জানতে পারল না। আবার বর্তমানে শাসক দল যে শহীদ দিবস পালন করে, কংগ্রেসের যুব আন্দোলনে কলকাতায় গুলি চালানোর ঘটনায় কয়েক জন মারা গিয়ে ছিল সে কারণেই, যে সব পুলিশ অফিসার সেই ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন, তাদের কয়েক জন বর্তমান সরকারের মন্ত্রী। আমার তো অদ্ভুত লাগে, মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য অফিসার দের কাজ না করা, কাট মানি নেওয়া,কিছু নেতার মানুষ কে ঠকানো এসব বন্ধ করতে চেষ্টা করে ছিলেন। বর্তমান রাজ্যের শাসক দল তৎকালীন বিরোধী দল ও এসব বন্ধ করে মানুষের উপকার করব বলে বেশ ভালো ভালো প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতা এসেছে, কাজ হচ্ছে রাস্তা ঘাট হচ্ছে, আলো বসছে, অনেকে রকম শ্রী আছে, যার বাবার টাকা আছে মানে কিনে দেওয়ার ক্ষমতা আছে সেও সাইকেল পাচ্ছে, কিন্তু এতো কাট মানি রাখা হচ্ছে যে রাস্তার প্রস্থ কমে যাচ্ছে, ঢালাই রাস্তা হলে আট ইঞ্চি মোটা ঢালাই এর কথা থাকলেও হচ্ছে, চার ইঞ্চি, আর একটা বর্ষা পেলেই বালি ধুয়ে চলে যাচ্ছে, রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে অসুবিধা, গাড়ি বা সাইকেল চালানো তো দূরের কথা। লোকে বলছেন তবুও তো করছে, বাম আমলে এরকম ঢালাই রাস্তা হয়েছে, সেখানে কিন্তু বালি ধুয়ে পাথর বেড়িয়ে পড়ে নি। সবার নাকি রেশন কার্ড থাকবে, সব গরীব দু টাকা কিলো চাল পাবে, গ্রামের সব গরীবের কার্ড নেই, সকলে দু টাকা কিলো চাল পান না। রেলে চাকরি করে, স্কুল শিক্ষক তিনি বি পি এল দু টাকা কিলো চাল পান। আবার মাসে যত কেজি চাল দেওয়ার তত কেজি পান না, মানুষের বক্তব্য তবুও তো দিচ্ছে, আর সে কারণেই এই দল বা সরকার যতই তোলা তুলুক, ঘুষ নিয়ে চাকরি দিক, অনেক ভালো। আরেক একটা দিক মানুষের মনে ঢুকেছে, বামফ্রন্ট সরকার আবার এলে সেই আগের মতোই নেতাদের ব্যবহার শুরু হবে, কারণ পুরোনো নেতারা এখন পদ থেকে সরে নি, নতুন দের সুযোগ করে দেয় নি। যে কোন কাজ নিয়ে গেলে কথা শোনান পিছন ফিরলে কাজ টা যাতে না হয় তার ব্যবস্থা করা বামেদের দোষ শত শত, হয়তো চোর নয়, কিম্বা এতো চুরি করে নি, কিন্তু এই সরকার মানুষ কাজ নিয়ে গেলে করে দেয়, তাড়িয়ে দেয় না, দলের লোক হলে তাকে সন্দেহ করে তার কাজে বাধা দেয় না। এই দলের মধ্যে গোষ্ঠী দন্ধ আছে, কিন্তু কাজের সময় বা ভোটের সময় তারা এক, এই কাজের জন্যে, আর তথাকথিত বাম নেতা দের খারাপ ব্যবহার ভুলতে না পারার জন্য, এই সরকার বা দল যতই তোলা তুলুক কাট মানি খাক, সারদা নারদা রোজভ্যালীর টাকা খাক তবুও মানুষ এদের কেই ভোট দেবে। তবুও এই শাসক দল মানুষ কে বিশ্বাস করতে পারছে, কারণ এতো কিছু জেনে মানুষ ভোট দিতে পারেন না, এটাই তাদের ধারণা করতে পারছে না, আবারও বলছি মানুষ ভোট দেবে কারণ বাম নেতাদের সেই ব্যবহার মানুষ ভুলতে পারে নি বলে, এখনও তারাই নেতা আছেন।
Anulekhon.blogspot.com
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
বাঙালি ও বর্তমান ভারত।
(ছবিটি নেট থেকে নেওয়া, একটি স্ক্রিনশট।) স্বাধীনতার পূর্বে ভারত কীরকম ছিল, ১৯৪৭ সালে ভাগ হওয়ার পর কেমন হয়েছে। কেন ভারত ভাগ করা হয়েছিল সে ...

-
সরস্বতী পুজোর পদ্ধতি, পরপর যা করতে হবে।১)আচমন ২)বিষ্ণু স্মরণ ৩)স্বত্ত্বি বাচন ৪) স্বত্ত্বি সূক্ত ৫) সাক্ষ্য মন্ত্র ৬) বরণ ৭) সংকল্প ৮) স...
-
আমি এর আগে একটি ব্লগে লিখেছি, দুর্গা যষ্টী পূজার মন্ত্র ।এখানে বলি আমি পণ্ডিত নই, বিভিন্ন ধরনের বই পড়ে, আর দু একজন ব্রাহ্মণের সাথে কাজ ...
-
ছবি টি কীসের বা কোন প্রাণীর নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না। মানুষের প্রথম পোষ মানা প্রথম প্রাণী, হয়তো অনেকেই পড়ে বলবেন এবার নতুন কী এতো আমরা স...
No comments:
Post a Comment