গত কাল সিঙ্গুরে চাকরি না পাওয়া বেকার যুবক যুবতী জড়ো হয়ে ছিল। সিঙ্গুর থেকে নবান্ন অভিযানে যাবে কিন্তু পুলিশ শুরুতেই বাধা দিয়ে সে আন্দোলন আটকে দেয়। পুলিশের বক্তব্য এই আন্দোলনের জন্যে অনুমতি নেওয়া হয়নি। কিন্তু সাধারণ মানুষের বক্তব্য আলাদা তাদেরও সমর্থন রয়েছে পুলিশের দিকে। বলছেন ঠিক করেছে। যখন ঘটনা ঘটেছে সেই মুহুর্তে আমি ওখানে ছিলাম।
ছবি তোলার সময় পরিচিত এক ভদ্রলোক আমাকে পেছন থেকে ডেকে নিয়ে গেলেন। আমি তার সাথে ঘটনা স্থল থেকে চলে এলাম অনেকটাই দূরে। আমি দেখলাম বেকার যুবক যুবতী জড়ো হওয়া এবং এই ধরনের আন্দোলন নিয়ে অনেকেই আপত্তি আছে। অর্থাৎ মানুষের সমর্থন নেই, কারণ আরেক জন পাশ থেকে বললেন, এরা চাকরি পেলেই নিজ মূর্তি ধরবে যখন তখন অফিসে আসবে কাজ করবে একটা কাজ করতে আঠারো মাসে বছর দেখিয়ে দেবে। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে জুতোর শুকতলা ছিঁঁড়ে যাবে তবুও কাজ হবে না। আর যদি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয় তাহলে তো কথাই নেই, এই তো লকডাউন যাচ্ছে কজন শিক্ষক বিদ্যালয়ে কদিন আসে এমনকি মিড ডে মিলের চাল আলু দেওয়ার দিন গুলোতেও হাজির নেই। আর অন লাইন পড়ানোর কথা সে যে কেমন জিনিস এরা জানে না। অথচ স্কুল খোলা থাকলে ক্লাসে গিয়ে মোবাইল ঘেঁটে যাচ্ছে। এদের নিয়োগ করে কি হবে সব বেসরকারি হয়ে গেলে খুব ভালো হয়। এই পোস্ট অফিসে যান আপনার যদি নাকের জলে চোখের জলে না করে ছেড়েছে কি কথাই বলেছি। সরকার ঠিক করছে এদের চাকরি দেয় নি। কি হবে দেখতে পাচ্ছেন না, যতক্ষণ বেকার ততখন আন্দোলন এবং চাকরি পেলে এখুনি সব করে ফেলবে। একবার পেলে আর কে পায়, সাধারণ মানুষ কে থোড়াই কেয়ার করবে। তিনি যোগ করলেন যান বিডিও অফিসে একটা আপনার যে কাজ করতে দু মিনিট লাগে সেটা দুবছরে হবে কিনা সন্দেহ আছে। আর যেহেতু পদে আছে আপনি কিছু বলতে পারবেন না। তার বললেন আমি একটা প্রিন্টিং এর কাজ গত দু বছর আগে করে ছিলাম এই বিডিও অফিসের আজ দু বছর হয়ে গেল এখনও আমার পাওয়না টাকা দেয় নি। পাশের আরেক জন বলে উঠল আমি তিন চার বছর ঘুরে বেড়াচ্ছি আমার রেশন কার্ড করার জন্য তিন চার বার আবেদন করা হয়ে গেছে এখনও কার্ড এলো না। আরেক জন বলল, আরে বার্ধ ভাতা আমি আজ কত দিন হলো যাচ্ছি, কিছুতেই হচ্ছে না। আরেক জনের কথা আমার রেশন কার্ড অন লাইন দেখাচ্ছে কিন্তু প্রিন্ট হয় নি, ঐ কারণে দেওয়া হবে না। আবার যদি বা দেখা যাচ্ছে কার্ড হয়েছে দেখাচ্ছে চার বছর পর সেখানে রেশন ডিলারের নাম আছে অন্য এলাকার। আর ছেলের নাম টা হয়ে গেছে গুজরাতি কায়দায় বাবার নাম ছেলের নাম তার পর পদবী। দারুণ কাজ এগুলো সংশোধন করতে আবার পাঁচ বছর সময় লাগবে। এই তো অফিসের কাজে এরা যদি চাকরি পায় এই রকম তো করবে ওর থেকে সরকার চাকরি দেয নি খুব ভালো করেছে। পাশ থেকে আরেক জন শুনে বলল, দেখুন সব ঠিক কিন্তু এর মধ্যে রাজনীতি আছে। রেশন কার্ড তো পুরোপুরি বর্তমান শাসক দল কে ভোট দিলে তবে হবে না হলে ঐ রকম ঘুরতে হবে আর ভুল হবে। এসবের অফিসার দের দায়ি করা যায় না। আরেক জন বললেন কিছু টা তো দায় নিতে হবে। একজন বলল আরে ঠিক বলেছেন চাকরির জন্য অনশন আন্দোলন আর চাকরি পেয়ে অন্য মূর্তি। আমি এই সরকার কে ধন্যবাদ দেব চাকরি না দেওয়ার জন্য। ট্রেনের খবর হল আমি আর দাঁড়ালাম না। একটা ছবি তোলার জন্য এতো কথা আলোচনা হয়ে গেল। আমি স্টেশনে এসে ট্রেনে উঠে পড়লাম।
No comments:
Post a Comment