"ছেলে ঘুমাল পাড়া জুড়াল বর্গী এলো দেশে,
বুলবুলিতে ধান খেয়েছে খাজনা দেব কিসে?
ধান ফুরাল পান ফুরাল খাজনার উপায় কি?
আর কটা দিন সবুর কর রসুন বুনেছি।"
বাচ্চা বয়সে মা ঠাকুর মার মুখে অনেকেই এই ছড়াটি শুনেছি, এটি কেবল ছড়া নয়, এটি ইতিহাসের একটি বাংলা তথা বাঙালির উপর মারাঠা দস্যু দের অত্যাচারে কাহিনী আছে। একটু বলে নিই তারপর আসল কথা লেখা যাবে। ১৭৪১ থেকে ১৭৫০ সাল পর্যন্ত বারবার মারাঠা দস্যূরা বাংলায় লুঠ পাঠ করতে আসত কখনো স্থল পথে কখনো জলপথে ভাস্কর পণ্ডিতের নেতৃত্বে তারা শষ্য শ্যামলা বাংলার ঘরে ঘরে লুট পাট করে নিয়ে যেত। সেই সময় বাংলার নবাব আলীবর্দী খাঁ খুব দক্ষতার সাথে এদের দমন করেন এবং বাংলা কে তথা বাঙালি কে লুঠের রাজ থেকে বাঁঁচান।
এতো গেল একটি ঘটনা ইতিহাসের আরেকটা ঘটনা ইংরেজ বণিক লর্ড ক্লাইভ মিরজাফরের বেইমানি তে ১৭৫৭ সালে নবাব সিরাজ দৌল্লা কে পরাজিত করে বাংলা দখল করে ধীরে ধীরে গোটা ভারত এই বণিক দের দখলে আসে, তার পর ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহ দিয়ে শুরু হয় ইংরেজ তাড়নোর আন্দোলন সেটা শুরু এই বাংলার মাটিতে বারাকপুরে। তার পর বাংলা মায়ের অনেক দামাল ছেলে নিজের জীবন বলি দেয় ইংরেজ তাড়াতে।
বাংলার সেই অগ্নিযুগের ইতিহাস আমার মনে হয় এই কালা ইংরেজ তথা ইংরেজর দালালরা জানে না। অত্যাচারি সাহেব কে হত্যা করার জন্য বাংলা মায়ের তিন দামাল সন্তান বিনয় বাদল দীনেশ রাইটার্স ব্লিডিং এ ঢুকে তাকে গুলি করে হত্যা করে ছিলেন। বাংলা অগ্নিযুগের বিপ্লবী দের প্রবল আন্দোলন এর ভয়ে রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লি নিয়ে চলে গিয়ে ছিল তথাকথিত প্রবল শক্তি শালী ইংরেজ। সেখানেও রেহাই ছিল না, পৌঁছে গিয়েছিলেন রাসবিহারী বসু, বটুকেশ্বর দত্ত, দিল্লি পার্লামেন্টের ভেতরে ঢুকে বোমা হামলা করেন ভগৎ সিং, রাজগুরু শুকদেও, মূল চক্রী কিন্তু বাঙালি রাসবিহারী বসু। বর্তমান এই বানিয়া বুক ফুলিয়ে বলছে আমি বানিয়া দেশ কে লুটে পুটে খেতে এসেছি। দেশের সব সম্পদ বেচে দিচ্ছে কর্পোরেট সংস্থার হাতে, দেশের এমন কোন সম্পদ নেই যা তারা দখল করছে না। ছলে বলে কৌশলে যে কোন প্রকারে ক্ষমতা দখল কর জনগণ কে কষ্টে রাখ তারা এক মুঠো খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে মার পিট করবে আর আমি এবং আমার বানিয়ার দল দেশের সমস্ত কিছু দখল করে নেব। আমাদের রাজ্যের কয়েক জন মানুষ ইংরেজ আমলে যারা ইংরেজের গোলামী করত এবং ইংরেজ সরকারের কাছে বাংলা ভাগ করে নিয়েছে ধর্মের নামে। সেই থেকেই বাঙালি জাতির মেরুদন্ড ভাঙতে শুরু হয়েছে, ধর্মের নামে ভাগ, জাতি গত ভাগ, আবার স্বাধীনতার সময়ে ধর্মের নামে ভাগ হওয়ার পর ওপার বাংলায় হিন্দু দের উপর অত্যাচার সে ভাষায় বর্ননা করা যায় না। সেই অত্যাচার থেকে বাঁঁচতে এপার বাংলায় এসেছে এবং তাদের মধ্যে ভাগ করে রেখেছে কীভাবে ওপার বাংলার মানুষ গুলো বাঙালি হিন্দু নয় বাঙাল আর এপার বাংলার মানুষ ঘটি, কারণ ভাষা বাংলা ভাষার বহু আঞ্চলিক ভাষা আছে। সে বেশিরভাগ অশিক্ষিত বাঙালি জানেও না, তাই কেবল নিজে দের মধ্যে ভাগ এটা কেবল এপার বাংলার অশিক্ষিত রা নয় ভালো শিক্ষিত বাঙালিরাও বলে। আমি তো মনে করি এই ভাগ করা হয়েছে যাতে বাঙালি জাতি আর কোন দিন একসাথে লড়াই আন্দোলন না করতে পারে। এটা তৈরি করা হয়েছে সেই স্বাধীনতার পর থেকে হিন্দু মহাসভার নেতাদের কৌশল। আজ সেই হিন্দু মহাসভা বলুন, হিন্দু জাগরণ মঞ্চ বলুন, জন যুদ্ধ সব মিলে মিশে আর এস এস এর তৈরি বিজেপি। যাদের মহান নেতা সাভারকর সেই নীতি এক দেশ এক ভাষা এক দেশ এক জাতি এক দেশ একটাই সরকার এক দেশ এক আইন। এই কারণেই এই লোকটা বলছে বাংলায় সত্তর সালের বেশি সময় ধরে অবৈধ ভাবে বাস করছে তাদের আমরা তাড়াব বা দেশে ফেরত পাঠানো হবে। আর এই কারণেই আরেকটা ধাপ্পাবাজ আমাদের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে যাচ্ছেন সেখানে গিয়ে মতুয়া মন্দিরে পুজো দিচ্ছেন।
কারণ বাংলার ক্ষমতায় আসার পরে শুরু হবে এন পি আর আপনি আমি যে ভোটার কার্ড নিয়ে ভোট দিলাম সেটা দিয়ে এবং আপনার কাছে থাকা সমস্ত রকম কার্ড দিয়েও প্রমান করতে পারবে না আপনি ভারতীয়, সব থেকে বড়ো বিষয় যে পাসপোর্ট বিদেশে আপনার প্রমাণ করে আপনি ভারতীয় সেটাও কাজে লাগবে না। C AA সেই রকমই আইন, ভাবুন ভাবতে শিখুন আপনার ভোটে নির্বাচিত সরকার আপনাকে বলবে আপনি নাগরিক নন। প্রমাণ করতে না পারলে চলে যেতে হবে ডিটেনশন ক্যাম্পে অপেক্ষা করতে হবে কবে বাংলাদেশের সরকার আপনাকে ফিরিয়ে নেবে, এক্ষেত্রে কোন ধর্ম নয় কারণ ঐ বণিক ঠিক করে রেখেছে বাংলা হবে পূর্ব বিহার এখানে আপনার বাড়িতে বিহারের তথা হিন্দি ভাষার মানুষ এসে বাস করবে। কলকাতার বড়াবাজারের সেদিনের ঘটনা নিশ্চয়ই দেখেছেন, ওরকম ঘটনা হামেশাই ঘটেছে সব আমরা জানতেও পারি না। আরেকবার বাঙালি উদ্বাস্তু হবে, না খেয়ে মরবে, বাংলার এই সর্বনাশের জন্য দায়ী বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী এবং যারা বিজেপি বিজেপি করে চিৎকার করছেন তারা। একবার আসাম আর ত্রিপুরার বাঙালির দিকে দেখুন বাঙালির দিকে চেয়ে দেখুন। কি করে তুলেছে, সেখানেও দিদি তৃণমূল কংগ্রেস করে ছিল ত্রিপুরার তৃণমূল কংগ্রেস এখন পুরোপুরি বিজেপি হয়ে গেছে। কারণ আমাদের মুখ্যযমন্ত্রী সেই ১৯৯৮ সাল থেকে RSS এর সাথে চুক্তি বদ্ধ যে ভাবে হোক বাংলা কে বিজেপির হাতে তুলে দিতে হবে। স্বাধীনতা লড়াই করে বাঙালি কেবল পেল লাঞ্ছনা অত্যাচার তাহলে ভারত স্বাধীন হয়ে কী লাভ হল? বাঙালি জাতি টা কে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিল ধর্মের নামে দেশ ভাগ, আর বর্তমানে এই ইংরেজের পা চাটারা। এই ভোটের পর তৃণমূল কংগ্রেস বলে কিছু থাকবে না সবটাই বিজেপি হবে, দিদি সেটা পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন ৩১ /৩/2021 এ সিঙ্গুরের সভায়। আর আজকের নন্দীগ্রাম ভোট দেখে মনে হল দিদির হার সময়ের অপেক্ষা।দিদি আপনি বাঙালি কে কে বাঁঁচাতে দিন, তাদের আর উদ্বাস্তু করবেন না।কারণ আপনি ডিটেনশন ক্যাম্পের জন্য জমি দিয়ে রেখেছেন, জানিনা ক্ষমতায় এলে সিঙ্গুরে কারখানা হবে না ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি করবে বিজেপি। আপনি রাজ্যের তথা বাঙালির যা সর্বনাশ করেছেন এবার সরে আসুন বাঙালি কে বুঝে নিতে দিন এই হিন্দি সাম্রাজ্য বাদ কে? দেখছেন পাঞ্জাব হরিয়ানায় বিজেপি নেতা মন্ত্রীরা সিকিউরিটি নিয়েও বাইরে আসতে পারে না। পাঞ্জাবিরা শুরু করেছে দ্বিতীয় স্বাধীনতার যুদ্ধ, বাংলা শেষ করার আগেই লড়াই শুরু করতে দিন না হলে দেরি হয়ে যাবে। আরেকটা বিষয় বাংলার মানুষ নিশ্চয়ই স্বাধীনতার ইতিহাসে সশস্ত্র সংগ্রামে বাঙালির কথা জানে নিশ্চয়। এখন তো ওসবের থেকেও অত্যাধুনিক অস্ত্র শস্ত্র বেড়িয়েছে। আমাদের দেশের দুই প্রধান মন্ত্রী - - - - - - ।ইংরেজ পুলিশ কে ধোঁকা দিয়ে তিন বাঙালি যুবক রাইটার্স ব্লিডিং এ ঢুকে অত্যাচারি কে শাস্তি দিতে পারলে, এই কালা ইংরেজ এবং এদের চামচা দের সাজা দিতে পারে না।
No comments:
Post a Comment