আগামী ২৬/১১/2020 সারা দেশ ব্যাপী বামপন্থী শ্রমিক সংগঠন এবং অন্যান্য ডান পণ্থী শ্রমিক সংগঠন বিজেপি ও তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন বাদে সকলে মিলে ভারত বনধ এর ডাক দিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন করছেন দীর্ঘ লকডাউন বন্ধ ছিল সব আবার বনধ বা ধর্মঘট। যারা বনধ বিরোধী তাদের কাছে আমার কয়েকটি প্রশ্ন, এই করোনা মহামারীর নামে যে লকডাউন হলো, সেখান থেকে অর্থাৎ ২৩/১১/2020 থেকে আজ অবধি কত খেটে খাওয়া মানুষের কাজ গেছে জানেন? কত দীন মজুর এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে যারা কাজ করেন তারা আজ কাজে ফিরতে পারছে না? একটাই কারণ দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল অনেক দিন শুরু হলেও ভাড়া আকাশ ছোঁয়া। দিনের পর দিন তারা বেকার, একবেলা খাবার যোগার করতে হাড় হিম হয়ে যাচ্ছে। সরকারি ভাবে সাহায্য সে তো পূজো কমিটি, আর ক্লাব গুলোর জন্য, আর রেশনের ব্যবস্থা সে আর বলতে হবে না? একটু খোঁজ খবর নিয়ে দেখুন রেশনের নামে কি চলছে? যদি বা সামান্য হলেও একটু টাকা উপার্জন করছে, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশ ছোঁয়া, কাঁচা আনাজে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন ধরনের রান্নার তেল, চাল ডাল, কোনটি কম দামে নেই, এর কারণ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন রোধ করে দেওয়া, কৃষি বিলের সাথে সাথে ঐ আইন তুলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের রাজ্যের সরকার বড় পুঁজিপতি দের ক্ষুদ্র ব্যবসায় অনুপ্রবেশের অনুমতি দিয়ে ছিল ২০১৪ সালে আর কেন্দ্রীয় সরকার সেটা যাতে আরও ভাল ভাবে করতে পারে জিনিস পত্র মজুত করে তার ব্যবস্থাপনা করে দিলেন। বড়ো বড়ো ব্যবসায়ীর দল জিনিস পত্র মজুত করে রেখে কৃত্রিম অভাব তৈরি করে জিনিস পত্রের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। কেউ বলার নেই, কারণ একক সংখ্যা গরিষ্ঠ দল, যা খুশি তাই করতে পারে। আর বেশি কিছু বললে আপনি দেশদ্রোহী, ইউ পি এ বলে একটা কালা আইন করে রেখেছে ব্রিটিশ সরকারের মত সেই আইনের বলে যে কোন মানুষ কে অর্থাৎ প্রতিবাদি মানুষ কে দেশদ্রোহী তকমা দিয়ে বিনা বিচারে আটক করা যায়। আসুন কেন এই ধর্মঘট কে সকলের সমর্থন করা দরকার কতগুলো কারণ এখানে দিলাম।
১) দেশের অন্নদাতা অর্থাৎ কৃষক আজ আক্রান্ত, এমন আইন করা হয়েছে, নীল কর সাহেব দের নীল চাষের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে।
২) স্বাধীনতার পর গত ৪৫ বৎসরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেকার সংখ্যা ছিল লকডাউন এর আগে আর এই লকডাউনের সাথে আন লকডাউন সহ আরও কুড়ি কোটি বেকার বেড়েছে।
৩) দেশের সরকারি সম্পত্তি বেচে দেওয়া হয়েছে বা হচ্ছে বড়ো বড়ো শিল্পপতি দের, এমনকি আদিবাসী দের জমি পর্যন্ত বাদ যাচ্ছে না। ব্যাঙ্ক, বীমা, বিমান বন্দর, রেল, টেলিফোন টেলিভিশন চ্যানেল তো অনেক আগেই বিক্রি করা হয়েছে। সরকারি কারখানা, বেঙ্গল কেমিক্যাল এর মত সংস্থা সব কিছু কে আধুনিকি করণ না করে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে বা তুলে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি দেশের প্রতিরক্ষায় অস্ত্র তৈরির কারখানা, ইছাপুর গান এণ্ড সেল ফ্যাক্টরি বিক্রি করে দেওয়া বা তুলে দেওয়া হচ্ছে বেসরকারি সংস্থার হাতে।
৪) আমি বা আপনি ভোট দিয়েছি সরকার গঠন করতে, নাগরিক প্রমাণ পত্র দেখিয়ে এখন সে সব অবৈধ। আপনার আমার নাগরিকত্ব পরীক্ষা করে দেখা হবে।
৫) জাতীয় শিক্ষা নীতি 2020 এমন একটা ব্যবস্থা যেখানে, গরীব মানুষের বা খেটে খাওয়া মানুষের সন্তান লেখা শেখা সংকটের মুখে, এমন ব্যবস্থা তারা করেছে সবটাই বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হবে।
৬) অনেক টাল বাহনার পর ট্রেন চলাচল করলেও এখনও গরীব খেটে খাওয়া মানুষের যাওয়ার অনুমতি নেই, বিশেষ করে হকার দের ক্ষুদ্র আনাজ ব্যবসায়ী দের নানান বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। করোনা করোনা করে এই সব মানুষ গুলো কে ধনে প্রাণে মেরে ফেলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ট্রেনে চেপে যাওয়ার অভ্যাস ভুলে যেতে বসেছে এই সব মানুষ, এতে লাভ, পরে বলা হবে রেল চালিয়ে ক্ষতি হচ্ছে, তাই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। সব খুলে দেওয়া হচ্ছে, কেবল এদের যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় নি। গরীব মানুষ কে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে দুই সরকারের নীতি করোনা করোনা করে। আ
গরীব মানুষ না খেয়ে মারা যাবে কেন, তার থেকে করোনায় মরা ভালো।
No comments:
Post a Comment