Anulekhon.blogspot.com

Tuesday, 24 March 2020

না খেয়ে মরুক জনতা, করোনায় যেন না মরে।

পশ্চিমবঙ্গ সরকার বা প্রশাসন যা করছে মানুষের ভালোর জন্য এক শ্রেণীর মানুষ ফেসবুক ফাটিয়ে ফেলছে। তার উপর কেন্দ্রীয় সরকার তথা প্রধানমন্ত্রী এক দিনের জনতা কার্ফু আজ পশ্চিমবঙ্গে আজ কার্ফু তে পরিবর্তন করা হয়েছে। কিছু মানুষ আছেন অব্যশই যাদের টাকা তারা খুব আনন্দিত এবং দেখলাম লিখেছেন মানুষ যদি না মানে পুলিশ দিয়ে মেরে ঘরে ঢুকিয়ে দিন। যারা ফেসবুক করছেন তাদের নিশ্চয়ই টাকা আছে কারণ একটা উন্নত মানের ফোন বা মার্স্ট ফোন কিনতে মিনিমাম পাঁচ হাজার টাকা লাগে। এই টাকা অনেকের এক মাসের আয়, ফেসবুকের এই লোক গুলো কি আনন্দ, কারণ প্রধানমন্ত্রী জনতা কার্ফু কথা বললেন অর্থাৎ রবিবার দিন মানুষ যেন ঘর থেকে না বেড়য়।
সত্যিই মানুষ মেনে নিয়ে ঘর থেকে বাইরে যায়নি।

এর মাঝে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ঘোষণা করে দিল শহরগুলো
লকডাউন করা হবে। রেল ঐ রবিবার দুপুর থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিল। পশ্চিমবঙ্গের জনতা সত্যিই কার্ফুর অধীনে এল ফেসবুকে অনেক মানুষ আনন্দ পেলেন, একবার ভাবলেন না, গ্রামের ঐ খেটে খাওয়া মানুষের কথা যে লোক টি দু শ টাকা মজুরি তে কাজ করে তার কথা কারণ রবিবার সন্ধ্যায় গ্রামের মুদির দোকান গুলো ভীর প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেল। যাদের টাকা আছে তারা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি করে মাল কিনে নিয়ে গেল, যে ঐ পাঁচ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে শেষ মাস পর্যন্ত চলে না, অসুস্থ হলে গাছের পাতা খায়, ডাক্তার দেখাবার টাকা নেই। সে জিনিস বা খাদ্য সামগ্রী কিনতে পারল না, বা ধার দেনা করে টাকা নিয়ে যখন গেল তখন দোকানে মাল নেই। এবার নিশ্চয়ই ঐ মানুষ এবং তার সাথে আরও কয়েক জন দু চার দিন পর থেকে না খেয়ে থাকবে। আমি জানি এসব ঐ ফেসবুক করা বড়ো বড়ো লেকচার দেওয়া মানুষ গুলো বলবে কেন দিদি ছ মাসের চাল বিনা মূল্যে দেবে বলেছেন। আসলে জানেই না ঐ দু টাকা কিলো চাল ক জন গরীব মানুষ পায়, যারা পায় তারা বেশিরভাগ তৃণমূলের বা শাসক দলের কর্মী বা সমর্থক, আর যারা বরাবর চোর বিরোধী সাধারণ মানুষ,অর্থাৎ যারা এখনও কোন রেশন কার্ড পায়নি, সেই সংখ্যাটা কম নয়। আর তাদের মধ্যে পরের বাড়িতে কাজ করে এরকম মানুষ ও আছে এবং ভিক্ষা করে খায় এরকম মানুষ ও আছে। তারা রইল না খেয়ে দেখতে মজা হবে, কিম্বা দেখে আনন্দ পাবেন, কিছু মানুষ তো প্রধানমন্ত্রীর কথায় কাঁসর ঘন্টা থালা বাজাল। সত্যিই কিছু মানুষের আর আনন্দ ধরে না। আবার পশ্চিমবঙ্গ সরকার খুব ভালো একটা ঘোষণা করলেন, শুক্রবার বিকেলে কি না, শনিবার আর রবিবার স্কুল গুলো থেকে মি ডে মিলের চাল আর আলু দেওয়া হবে। খুব ভালো কিছু মানুষ দু কেজি চাল আর দু কেজি আলু পাবেন। একবারো ভাবা হলো না, স্কুল গুলো ছুটি দেওয়া হয়েছে 15/3/2020 থেকে কি করে ঐ ছাত্র ছাত্রীরা খবর পাবে, এক্ষেত্রে শিক্ষকরা তৎপর শনিবার দুপুরে সাড়ে দশটা প্রশাসনিক বৈঠক বারোটায় নির্দেশ আলু স্কুল কিনে ছাত্র ছাত্রীদের দেবে। শনিবার আলু কেনার জন্য যে মি ডে মিলের আনাজ দেয় তাকে বলা এবং রাধুনী দের খবর দেওয়া হয়। আর তার সাথে ছাত্র ছাত্রীদের খবর পাঠানো হোল। এবার নির্দেশ এলো চাল আলু 26/3/2020 এর মধ্যে দিতে হবে। শিক্ষকরা সেই মতো খবর দিলেন, আবার রবিবার শনিবার খবর হোল রবিবার দিন গুছিয়ে রেখে সোমবার ও মঙ্গলবার দিতে হবে। তার পরে আবার নির্দেশ বদলে গেল রবিবার রাতে সোমবার অর্থাৎ একদিন দেওয়া যাবে। আর দেওয়া হবে না, সোমবার সকাল থেকে নাকি গন মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, কেবল দিলেই চলবে না তার রেকর্ড করা হবে ছবি সহ কত জন পেল তার তালিকা জমা দিতে হবে।পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য মনে হয় এই পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক কুল,  সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র তো 50 থেকে 100 জন নয়। যে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাত্র ছাত্রী বেশি 200 থেকে 400 সেখানের প্রধানশিক্ষক ফোন করে করে দু দিন বলেন, আবার তার পক্ষে ঐ অত ছাত্র কে ফোন করে জানান সম্ভব বলবেন বাকি শিক্ষক তারা যথারীতি শিক্ষকতা করেন প্রধান শিক্ষক বেশি বেতন পান তিনি সব করবেন। আবার ও দিকে ঘোষণা করা হয়েছে একসাথে অনেক মানুষ জমায়েত করা যাবে না। তিনি কি করেন অর্ধেক করে দুদিন দেবেন ঠিক করেন, তা সত্ত্বেও প্রথম দিন যত জন এসেছে কাউকে ফেরানো হয়নি। পরের দিন মঙ্গলবার সকালে তিনটি সময়ে দেবার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু সকালে বাধ সাধল জনতা কার্ফু, মোরে মোরে পুলিশ, মানুষ কে বাজারে যেতে দিচ্ছে না। আমি মনে মনে ভাবলাম সত্যিই ঐ ফেসবুক ওনাদের ইচ্ছা পূরণ করতে দিদির পুলিশ উঠে পরে লেগেছে, উল্টে ফিরে এসে আবার ফোন করে জানাতে হলো আজ আর ঐ জিনিস মানে চাল আর আলু দেওয়া গেল না। কত মানুষ কে ফোন করা যায়। এক জন কে ফো করে অনুরোধ বলে দিন। আবার ফোন এ ভাবে প্রায় 100 থেকে 150 জন কে ফোন করে আবার বারণ করা। জানি না ঐ আলু জনতা কার্ফু ওঠার পর পর্যন্ত ভাল থাকবে কিনা! দিদি তো বললেন শহরে এবং নির্দিষ্ট কত গুলো শহরের নাম করে দিলেন তাতেও এই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মফস্বল বন্ধ করা, প্রশাসনের এই কাজ কে আমি আকুণ্ঠ সমর্থন করি। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, মানুষ কে করোনা থেকে বাঁচতে হবে, সে না খেতে পেয়ে মরুক, কিন্তু করোনা যেন না হয়।

No comments:

Post a Comment

বাঙালি ও বর্তমান ভারত।

 (ছবিটি নেট থেকে নেওয়া, একটি স্ক্রিনশট।) স্বাধীনতার পূর্বে ভারত কীরকম ছিল, ১৯৪৭ সালে ভাগ হওয়ার পর কেমন হয়েছে। কেন ভারত ভাগ করা হয়েছিল সে ...