অনেকেই আছেন বিষয়টি গুলিয়ে ফেলেছেন, সেকুলার ( secular) আমার যতদূর জানা এই ইংরেজি শব্দটির বাংলা ধর্মনিরপেক্ষ, অর্থাৎ যিনি সব ধর্ম কে সম্মান করেন। সকল ধর্মের মানুষকে শ্রদ্ধা করেন, তিনি সেকুলার। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র অর্থাৎ যে খানে সব ধর্ম সমান অধিকার আছে ধর্ম পালন করার কেউ কেউ কোন ভাবে বাধার সৃষ্টি করবে না। কিন্তু অনেক মানুষ আছেন, ভাববেন সেকুলার হল নাস্তিক যারা ঠাকুর দেবতা কিছু মানে না। অর্থাৎ atheist এর বাংলা নাস্তিক বা নাস্তিক ইংরেজি atheist ভুলে যান। অনেকেই ফেসবুক বা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন, তোরা তো সেকুলার বা অমুক পাটি বা রাজনৈতিক দল সেকুলার এবং সেকুলার হল তারা নাস্তিক অর্থাৎ ঠাকুর দেবতা মানে না। ভুলেই যান ধর্ম নিরপেক্ষতা আর নাস্তিকতা সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। যারা নাস্তিক তারা ভুলেও ঠাকুর বা দেবতার ধার দিয়ে যায় না। তাদের যুক্তি দিয়ে তারা বেড়িয়ে আসে, বিজ্ঞান কখনো বিশ্বাস করে না ঠাকুর দেবতা আছে। দেবতা একটি পাথর বা মূর্তি মাত্র, আর এক দল আছে যারা ধর্ম মানে কিন্তু কঠোর ভাবে নয়। আর কিছু আছে ধর্মান্ধ এরা ধর্ম ছাড়া আর কিছু জানেন না, তাদের কাছে স্বর্গ মর্ত্য আছে এবং স্বর্গে দেবতা থাকে। কিন্তু আদৌ তারা স্বর্গ চোখে দেখে নি, মৃত্যুর পর সত্যি যমদূত তাদের যমালয়ে নিয়ে যায় কি না চোখে দেখেনি কিন্তু বিশ্বাস করে। আবার অনেকেই আছেন পরজণ্মে বিশ্বাস করে, অর্থাৎ মৃত্যুর পর আবার তার আত্মা পুনরায় জণ্ম গ্রহণ করে। অর্থাৎ আত্মার মৃত্যু নেই, যদি তাই হতো তাহলে ভারতের লোক সংখ্যা তেত্রিশ কোটি থেকে বেড়ে একশ তেত্রিশ কোটি হলো কি করে? ছাড়ুন অনেক গোরু ছাগল মানুষ রূপে জণ্ম নিচ্ছে সে জন্য বেড়ে যাচ্ছে। আসলে সেকুলার হলো ধর্ম নিরপেক্ষতা, একটা রাষ্ট্রের বা এলাকার দায়িত্ব যাতে সকল ধর্মের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারে এবং তার ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান সুষ্ঠু ভাবে পালন করতে পারে তার ব্যবস্থাপনা করা। যেটা বর্তমান বাংলাদেশে নেই, এবং কিছু ধর্মান্ধ মানুষ কিছুতেই অপর ধর্ম কে মেনে নিতে পারে না, আবার প্রতিনিয়ত অশান্তি ছড়িয়ে চলে যাতে দাঙ্গা লাগিয়ে লুঠপাট করা যায়। এই রকম উগ্র ধর্মান্ধ সব ধর্মের কিছু কিছু আছে, আর কিছু মানুষ এদের ব্যবহার করে নিজের ব্যবসা অর্থাৎ ধর্মের ব্যবসা বাড়াতে থাকে। যেমন ধর্মীয় জলসা, কীর্তনিয়া, শ্রীচৈতন্য বা গৌরাঙ্গ হরিনাম বিলিয়ে মানুষ কে এক সূত্রে বাঁধতে চেয়ে ছিলেন। এখন তাঁর সেই নাম কীর্তন করে কীর্তনিয়ারা হাজার হাজার টাকা আয় করে। যে যত বেশি টাকা নেয় তিনি তত ভালো গায়ক বা কীর্তনিয়া। এই ভাবে ধর্মীয় সভা বা জলসাও তাই অর্থাৎ ধর্ম তাদের কাছে ব্যবসা। সে কারণেই এক ধর্ম অন্য ধর্মের কত বড় এবং কোনো কোনো ধর্মের মানুষ বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের এই রকম জলসা বা ধর্মীয় সভা থেকে, তারস্বরে চিৎকার করে অন্য ধর্মের মানুষ কে এবং তাদের ধর্ম সম্পর্কে খারাপ কথা প্রচার করা হয়। এই কয়েক দিন আগে বাংলাদেশের এক হুজুর না আলেম বলছিলেন মূর্তি ভাঙ্গা আমার কাজ মূর্তি আমি ভাঙব, বা হিন্দু ধর্মের মানুষ কাফের তাদের সম্পদ লুট করলে দোজাক অর্থাৎ নরকে যেতে হবে না। এসব কথা হামেশাই বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সভা থেকে জোর দিয়ে বলতে শোনা যায়। অর্থাৎ এদের কাজ লুট করা এবং মানুষে মানুষে লড়াই লাগিয়ে দেওয়া। এক কথায় এরাই ধর্মান্ধ ব্যক্তি। এদের দৌড় ঐ মসজিদ পর্যন্ত, আধুনিক শিক্ষার ধারে কাছে নেই এরা। এদের থেকে মনে হয় সেকুলার মানুষ অনেক ভালো কারণ তিনি যেমন সকল ধর্মের মানুষ কে সণ্মান দেন সেই রকম সকল মানুষ কে খুব তাড়াতাড়ি আপন করে নিতে পারেন। এটাই ধর্ম নিরপেক্ষতা বা সেকুলারাজিম secularism. তাই secular আর atheist অর্থাৎ ধর্ম নিরপেক্ষতা আর নাস্তিকতা সম্পূর্ণ আলাদা দুটি বিষয়।
Anulekhon.blogspot.com
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
বাঙালি ও বর্তমান ভারত।
(ছবিটি নেট থেকে নেওয়া, একটি স্ক্রিনশট।) স্বাধীনতার পূর্বে ভারত কীরকম ছিল, ১৯৪৭ সালে ভাগ হওয়ার পর কেমন হয়েছে। কেন ভারত ভাগ করা হয়েছিল সে ...

-
সরস্বতী পুজোর পদ্ধতি, পরপর যা করতে হবে।১)আচমন ২)বিষ্ণু স্মরণ ৩)স্বত্ত্বি বাচন ৪) স্বত্ত্বি সূক্ত ৫) সাক্ষ্য মন্ত্র ৬) বরণ ৭) সংকল্প ৮) স...
-
আমি এর আগে একটি ব্লগে লিখেছি, দুর্গা যষ্টী পূজার মন্ত্র ।এখানে বলি আমি পণ্ডিত নই, বিভিন্ন ধরনের বই পড়ে, আর দু একজন ব্রাহ্মণের সাথে কাজ ...
-
ছবি টি কীসের বা কোন প্রাণীর নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না। মানুষের প্রথম পোষ মানা প্রথম প্রাণী, হয়তো অনেকেই পড়ে বলবেন এবার নতুন কী এতো আমরা স...
No comments:
Post a Comment