Anulekhon.blogspot.com

Friday, 23 April 2021

বিজেপি বাঙালি বিদ্বেষী, এরা বার বার নাগরিকত্বের কথা বলে কিন্তু বেকারত্ব নিয়ে কিছু বলে না। ।


এই ভদ্র মহিলা  বাংলা তথা বাঙালির উদ্দেশ্য বলছেন, যারা বাংলাদেশ থেকে এসেছেন, তাদের কাগজ পত্র ঠিক না থাকলে ফেরত যেতে হবে। ওনার পদবী দেখে মনে হচ্ছে উনি বাঙালি নন। আমি বাঙালি অবাঙালির মধ্যে বিভাজন করতে চাই না, কারণ আমি মনে করি আমি প্রথমে আমি একজন ভারতীয় তারপর বাঙালি। যাহোক আজ পর্যন্ত বিজেপির যে সব নেতা মন্ত্রী NRC, CAA NPR নিয়ে যে ভাবে বাঙালি কে ভয় দেখাচ্ছে সেটা নিয়ে আমার কয়েকটি প্রশ্ন আছে,  বাংলা তথা ভারত ভাগ করল কারা? বাংলা ভাগ করার সময় সাধারণ বাঙালির মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল কি? আমি জানি উত্তর আসবে না কারণ কয়েক জন তথা কথিত বাঙালি হিন্দু এবং মুসলিম নেতা বলি আর তখন কার ইংরেজের গোলাম বলি তাদের মতামত নিয়ে বাংলা ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। হিন্দু দের মধ্যে প্ররধা ব্যক্তিটি ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী আর মুসলিম লীগের হয়ে ছিলেন তখন কার দিনে কলকাতার শাসক সুরাবর্দী। এদের উস্ককানি তে 1946 সালে বাংলায় হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা হয়েছিল, একটি জুটমিলের হিন্দু কর্মীদের প্রথম এই দাঙ্গায় বলি দেওয়া হয়েছিল। কলকাতায় বিভিন্ন হিন্দু বস্তিতে দাঙ্গা এবং লুট পাট চলার তিন দিন পর। গোপাল মুখার্জী, তিন কলকাতায় পাঁঠার মাংস বেচতেন সে কারণে লোকে তাকে গোপাল পাঁঠা নামে ডাকত। এই গোপাল পাঁঠার নেতৃত্বে শুরু হলো পাল্টা আক্রমণ বেশ কয়েক দিন চলার পর সুরাবর্দী শান্তির বার্তা দিলেন, থামল দাঙ্গা। এর পরই শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর নেতৃত্বে কয়েক জন বাঙালি ইংরেজের কাছে দাবি করেন বাংলা কে ভাগ করা হোক হিন্দুরা এই মুসলিম দের সাথে বাস করতে পারে না। ইংরেজ শাসক লুফে নিয়ে ছিল কথাটা কারণ তারা 1905 সালে বাংলা কে ভাগ করতে চেষ্টা করেও পারেনি, কারণ তখন বাংলায় রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর আর অন্য অনেক বিশিষ্ট বাঙালি মানুষ বাংলা কে ভাগ করতে দেননি। শেষ পর্যন্ত শুরু হয়েছিল বঙ্গ ভঙ্গ আন্দোলন যে আন্দোলন চরম রূপ নেয় 1910 থেকে 1911 সালে ইংরেজ শাসক বঙ্গ ভঙ্গ রোধ করতে বাধ্য হন। ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
এত গেল ইতিহাস, অনেকেই বলছেন দেশ যখন স্বাধীন হয়ে ছিল তখন বিজেপি ছিল না, তাহলে বিজেপি কেন দেশ ভাগের দায় নেবে। যারা এই কথা বলছে তাদের মনে করিয়ে দিতে বলি তখন কার হিন্দু মহাসভা আর কত গুলো হিন্দুত্ব বাদী সংগঠন মিলে বর্তমান বিজেপি আর বাংলায় একটি হিন্দুত্ব বাদী সংগঠনের নেতা ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী। তিনি ইংরেজ কে দিয়ে বাংলা ভাগ করতে সমর্থ হন কারণ তিনি ইংরেজ সরকারের গোলাম ছিলেন। সব থেকে বড়ো লজ্জা লাগে এই শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী বাংলার বাঘ স্যার আশুতোষ মুখার্জীর সন্তান। বাংলা ভাগ হলো, ধর্মের নামে এবার ওপার বাংলার হিন্দুরা দলে দলে এপার বাংলায় আসতে লাগলো কিন্তু এপার বাংলার মানুষ তাদের মেনে নিতে পারে নি। এই শ্যমাপ্রসাদ মুখার্জি দের মতো কিছু মানুষ সুক্ষ্ম বিভাজন তৈরি করতে সমর্থ হন ওরা বাঙাল বাঙালি নন। কেন কি কারণে তারা নিজেদের ভিটে মাটি ছেড়ে এপার বাংলায় এসেছে সেটা বলা হয় নি। সে ইতিহাস মুছে ফেলা হল, এই বাঙালি হিন্দুরা 1947 সালের 15 আগষ্টের আগে পর্যন্ত ছিল ভারতীয়, তার পর তারা হয়ে গেছে পাকিস্তানের নাগরিক কারণ দেশ ভাগের সময় বাংলার এই পূর্ব ভাগ পূর্ব পাকিস্তান নামে পরিচিত ছিল। এই 1947 এর আগষ্ট থেকে 1972 সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত যে সব বাঙালি হিন্দু ওপার বাংলা থেকে ভিটে মাটি ছেড়ে এসেছে তারা পাকিস্তানি নাগরিক। আর 1972 এর 25 শে ডিসেম্বর পর যারা এসেছে তারা বাংলাদেশী। একটা জাতির নাগরিকত্ব কত তাড়াতাড়ি বদল করা যায় সেটা এই বাঙালি হিন্দু জাতি কে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। বিজেপি এই নেত্রী কে বলছি আপনি বিশ্বাস করুন আর না বাঙালি হিন্দু জাতির সাধারণ মানুষ কিন্তু এগুলো চায় নি। তরা চায় নি ধর্মের নামে দেশ ভাগ, আর ধর্মের নামে মানুষ খুন। ধর্ম নিয়ে যারা ক্ষমতা দখল করতে চায় সেই সব ক্ষমতা লোভী কিছু নেতার জন্য বাংলা ভাগ ।আপনি জানেন না, বাংলা কোনো দিন সহজে কোন অপশক্তির কাছে মাথা নত করে নি। একটু ইতিহাস টা পড়ে দেখুন দেখতে পাবেন বাংলায় মোঘল কে ঢুকতে বাধা দেওয়া সেই বার ভুইঞা অর্থাৎ বারো জন সামন্ত রাজা তারা কেউ পাঠান কেউ বাঙালি হিন্দু সকলে মিলে মোঘলের আগ্রাসন কে রুখে দিয়ে ছিল। নবাব আলীবর্দী খাঁ তিনি বর্গী দমন করে বাঙালি কে রক্ষা করে ছিলেন, তিনি হিন্দু মুসলমান দেখেন নি, সিরাজ অত্যাচারি এটার জন্যে সিরাজের বিরুদ্ধে ষঢ়যন্ত্র করে ইংরেজ শাসনের সুচনা করা সেই বাঙালির মধ্যে কেবল মিরজাফর ছিল না, ছিল জগৎ শেঠ, উমির চাঁদ, রাজা কৃষ্ণ চন্দ্র রায় আরও অনেকে এর মধ্যেও সিরাজ চেষ্টা করে ছিলেন তার প্রজারা যাতে শয়তান ইংরেজের কবলে না পরে। আপনি তো বাঙালির ভালো চান তাই বলছি বাঙালির নাগরিকত্ব নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না সে তারা ঠিক বুঝে নিতে পারবে। আপনি বাঙালির বেকারত্ব নিয়ে বলুন কেন্দ্র সরকার কে বলুন কেবল বিজ্ঞাপনে চাকরি না দিয়ে বাস্তবে নিয়োগ করতে। দেশের সাধারণ মানুষের সম্পদ কর্পোরেট সংস্থার কাছে বিক্রি না করে নতুন করে তৈরি করতে। ইংরেজ সরকারের মত সাধারণ গরীব মানুষ কে বিভিন্ন ভাবে মৃত্যু মুখে ঠেলে না দিয়ে বা শোষণ না করে খাদ্য বাসস্থান স্বাস্থ্য বা চিকিৎসার ব্যবস্থা করে তাকে সুস্থ ভাবে শান্তি তে বাঁচাতে দিন। বাংলা কে আসাম করে তুলবেন না। বাঙালি কিন্তু লড়াই করতে জানে এটা মনে রাখবেন। 

No comments:

Post a Comment

বাঙালি ও বর্তমান ভারত।

 (ছবিটি নেট থেকে নেওয়া, একটি স্ক্রিনশট।) স্বাধীনতার পূর্বে ভারত কীরকম ছিল, ১৯৪৭ সালে ভাগ হওয়ার পর কেমন হয়েছে। কেন ভারত ভাগ করা হয়েছিল সে ...