Anulekhon.blogspot.com

Thursday, 11 July 2019

বামেদের একটি শ্লোগান ছিল, "ভোট দিন বাঁচাতে তারা হাতুড়ি কাস্তে" ।

বামেদের কী ভুল ছিলো আমার জানা নেই, হয়তো কিছু স্থানীয় বামনেতা মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন। মানুষের সাথে না মিশে, তাদের জীবন জীবিকার স্বার্থে কাজ করে গেছেন, হয়তো বা গরীব মানুষ কে শেষের দিকে অবহেলা করেছেন। তাদের কথা গুরুত্ব দিয়ে শোনেনি, কেউ কেউ সঠিক কাজ করেনি। বামেদের শেষ দিকে কিছু নেতার ভুল, সাধারণ মানুষ কে ঠকানো, আরো নানা কারণে সাধারণ মানুষ ২০১১ সালের নির্বাচনে বামেদের ভোট দেয়নি। এসব যেমন কারণ ছিল তার সাথে বড়ো কারণ মানুষ কে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে, তাদের প্রতিটি দাবী পূরণ করা হবে, প্রতিশ্রুতি দিয়ে, সরকারি কর্মচারী থেকে শুরু করে খেটে খাওয়া মানুষের জন্য নানা ধরনের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে, মানুষ কে ভুল বুঝিয়ে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে।  সরকার ক্ষমতায় আসার পরে তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে গিয়ে, সিঙ্গুরে জমি ফেরত দিতে গিয়ে পারে নি। অনেক আইনি লড়াই করে সুপ্রীম কোর্টের রায় নিয়ে, জমি ফেরতের ব্যবস্থা করা হয়েছে,জনগণের করের কোটি কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। ক্ষমতা পেয়েই বিভিন্ন ভাবে টাকা বিলিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যার প্রয়োজন নেই, তাকেও টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে বা এখনও হচ্ছে। সরকারের দায় আছে, প্রতিটি মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার কে সুরক্ষিত করা, খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা, কিন্তু সেই ব্যবস্থা যদি সঠিক মানুষ না পায়, তাকে যদি না খেয়ে থাকতে হয়, কাজ না পেয়ে ঘুরে বেড়ায় অথচ একশো দিনের কাজ প্রকল্প আছে। বামেদের শেষ দিকে এতো খারাপ অবস্থা হয়নি, মানুষ আরও বেশি কিছু পাবে, সহজে সরকারি চাকরি হবে। রাজ্যে শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতী থাকবে না। প্রতিটি পরিবারের একজন চাকরি করবে, সঠিক সময়ে সরকারি কর্মীদের ডিএ, পে কমিশন দেওয়া হবে, দূর্নীতি দূর করে মানুষ কে ঠকানো বন্ধ করা হবে, এরকম হাজারো প্রতিশ্রুতি, বর্তমান শাসক দল ক্ষমতায় আসার আগে দিয়ে ছিল। তিনি নাকি সততার প্রতীক, ক্ষমতায় এলে সোনার বাংলা তৈরি করে দেবেন। কলকাতা লন্ডন হবে, দার্জিলিং সুইজারল্যণ্ড হবে। আরো নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতা দখল করে, সততার প্রতীকের আসল রূপ বেড়িয়ে পড়ল ২০১৩ সালে। সারদা কেলেঙ্কারি বা চিটফাণ্ড কেলেঙ্কারি। অবশ্য গৌতম দেব এবিষয়ে আগেই বলেছিলেন, বাম সরকার এই বে-আইনি অর্থ সংস্থা কে আটকাতে একটি আইন তৈরি করে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠিয়ে ছিলেন যা আমরা পরে কাগজে পড়েছি, কিন্তু তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদন করে নি। তার একটা কারণ এখানে তখন কংগ্রেস আর তৃণমূল কংগ্রেস সমঝোতার কথা হচ্ছে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অনেক তৃণমূল সাংসদ তখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। যখন ধরা পড়ল চিটফাণ্ড কেলেঙ্কারি তখন মুখ্যমন্ত্রী, বললেন যা গেছে তা যাক, অর্থাৎ লক্ষ লক্ষ মানুষের টাকা আর ফেরত পাওয়া যাবে না। কেবল সারদা নয় তার সাথে আরও নানা চিটফাণ্ড এবং ঘুষ কেলেঙ্কারি নারদা কেলেঙ্কারি, আর তোলা তোলা মিথ্যে কথা বলা প্রতিশ্রুতি দিয়ে পালন না করা, কেবল হচ্ছে, হবে, করব, তবে সরকারি তরফের থেকে টাকা দান করা এতো সুন্দর আর সহজে করা যায় তা এ সরকার দেখিয়ে দিয়েছে।  ক্লাব কে টাকা দেওয়া, পুজোর জন্য টাকা দেওয়া আর রথের জন্য টাকা দেওয়া, টাকা পয়সা দিয়ে চাল বিলি করে মানুষ কে ভিক্ষারী তে পরিণত করে দিয়েছেন। আরেক দিকে সরকারি নিয়োগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কলকারখানা বন্ধ নতুন তৈরি হচ্ছে না। বেকার যুবকের দল অটো টোট নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে চাপার বা যাওয়ার লোক সীমিত অনেক বাস রুট বন্ধ হয়ে গিয়েছে, এদের জন্য। যে মানুষ কে দু টাকা কিলো চাল দিচ্ছে, তাকে যদি রেল ব্যবস্থা নেই এমন জায়গায় যেতে হয়, তবে দুবার তিন বার অটো টোটো পাল্টে যেতে হচ্ছে, এতে ভাড়া বেশি লাগছে। বর্তমান রাজ্য সরকারের এই সব ভুল পরিকল্পনায় কিছু মানুষ খুব আনন্দিত, তারাই ভোটের সময় রিগিং করতে যাচ্ছে,জানে এসব করলে কিছু টাকা পাওয়া যাবে। এসব কারণে বর্তমান শাসক দল বুঝতে পারছেন যে তাদের দিন শেষ তারা সাধারণ মানুষ কে বিশ্বাস করতে পারছে না। অনেকেই এই শাসক দলের থেকে মুক্তি চাইছে, সেই জন্যই বামেদের ঐ শ্লোগান ভোট দিন বাঁচাতে তারা হাতুড়ি কাস্তে। এখন তো পশ্চিমবঙ্গের দু ফুলের একটা কাজ কে বলছে, জয় শ্রী রাম বল না হলে মারব। আরেক ফুল শাসক দল বলছে, জয় শ্রী বলবি না, জয় বাংলা বল না হলে মার খেতে হবে। এর থেকে মুক্তি পেতে মানুষের বামেদের শ্লোগান, ভোট দিন বাঁচাতে তারা হাতুড়ি কাস্তে ।


No comments:

Post a Comment

বাঙালি ও বর্তমান ভারত।

 (ছবিটি নেট থেকে নেওয়া, একটি স্ক্রিনশট।) স্বাধীনতার পূর্বে ভারত কীরকম ছিল, ১৯৪৭ সালে ভাগ হওয়ার পর কেমন হয়েছে। কেন ভারত ভাগ করা হয়েছিল সে ...