গরু দুধ দেয় ভোট দেয় না ।

আমরা ছোট বেলায় যারা পড়াশোনা করেছি, কম বেশি সকলেই গরুর রচনা লিখেছি। গরুর দুটো কান দুটো পা ইত্যাদি আছে। গরু কী খায়, আর গরুর উপকারীতা, আর লিখেছি গরু দু রকম বলদ গরু আর গাই গরু। বলদ গরু অর্থাৎ ষাঁড় গাড়ি টানে, লাঙল টানে আরও নানা রকম কাজ করে থাকে। আর গাই গরু দুধ দেয়, কিন্তু ভোট দেয় না। মুশকিল হল কিছু ক্ষেত্রে কিছু মানুষ বুঝতে পারছে না, মানুষের প্রাণের থেকে গরুর প্রাণের দাম বেশি হয়েছে, এখন তো রাজ্যেও যা চলছে, সেও বলার মতো না। আমাদের রাজ্যের শাসক দলের কর্মী নেতারা মুখে না বললেও মানুষ কে গরু বানিয়ে রেখেছে। দু টাকার ভিক্ষারি বানিয়ে রেখেছে। আমরা হচ্ছি মানুষ গরু, কিছু মানুষ তো করে খাচ্ছে, আমরা এই গরীব মানুষ মানুষ গুলো কে দু টাকা কিলো চাল পাবার লোভে কারণ সকলে পায় না। আর পেলেও ঐ চালে সবার সারা মাস চলে না, কারণ একজন মানুষ সারা মাসে দু কিলো দু টাকা কিলো চাল পান। আর যাদের অন্য কার্ড তারা তেরো টাকা কিলো চাল ঐ একই পরিমাণ পায়। আমি দেখেছি অনেক স্কুল টিচার এবং রেলে চাকরি করে তাঁরাও বি পি এল কার্ডের দু টাকা কিলো চাল পায়, আটা পায় ঐ জিনিস গুলো এনে বাইরে কুড়ি টাকা কিলো বিক্রি করে দেন। আর এমন অনেক গরীব মানুষ আছে যাদের ননু আনতে পান্তা ফুরোয়, পরের বাড়িতে ঝি গিরি করে সংসার চালান, কারো স্বামী হয় তো মদ খেয়ে মারা গেছে, না পায় বিধবা ভাতা না পায় বার্ধক্য ভাতা, ঘর বাড়িও থাকার উপযুক্ত নয়,টালির বা টিনের চাল, বর্ষার     জল বাইরে পড়ে না ঘরে পরে, ছেলে পুলে নিয়ে গাছ তলায় থাকার সামিল, সে সব পরিবার কিছু বা কোন সরকারি সাহায্য পায় না। পাড়ার হাফ বা ফুল নেতা এই ছ বছরের মধ্যে বাড়ি গাড়ি করে দিব্যি কাটিয়ে দিচ্ছে, আগে কংগ্রেসের মুখে আমরা গরীব মানুষরা একটা কথা শুনতাম ভগবান তোদের দেয় নি তো আমরা কি করতে পারি। ভগবান আমাদের গরীব করে রেখেছে,সত্যি গরীব মানুষ ভগবান কে ডাকে আর তাদের বোকা বানিয়ে, গরুর মতো খাটিয়ে নিয়ে, নেতা মন্ত্রীরা টাকার পাহাড় তৈরি করে নেন। দেশের বা রাষ্ট্রের কোনো দায় দায়িত্ব নেই, এদের দেখার সমস্ত কিছু থেকে বঞ্চিত এরা, আগে তবু ভোটের সময় হলে নেতা মন্ত্রী সান্ত্রী দের দেখা মিলত, আর এখন তাদের দেখা পাওয়া ভার, কারণ এখন পশ্চিমবঙ্গের খুব কম মানুষই ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়। সরকারি সাহায্য না পেলেও একটা ভোট দিতে যেত, এখন ভোট দিতে যাওয়া মানে শাসক দলের ক্ষুদে মাঝারি নেতারা বুথে বসে আছে, কারণ তারা বলে এসেছে দু টাকা কিলো চাল করে দেবে দু দিন বা এক সপ্তাহের জন্য দিয়েও দিয়েছে, সরকারি প্রকল্পের ঘর করে দেবে বলে গেছেন, কিম্বা কাউকে করে দিয়েছে, যা টাকা এসেছে তার পঁচিশ শতাংশ পকেটে ঢুকেছে, কারো দোতলা বাড়ি সেও ঘরের টাকা অর্দ্ধেক পেয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ভোট দিতে পারবেন না সাধারণ মানুষ তাদের ভোট দিতে হলে দিতে হবে শাসক দল কে, শাসক দলের কর্মী রা তার ভোট দিয়ে দেবে । আমাদের মতো সাধারণ মানুষ কে গরুর বানিয়ে মিথ্যের ফুলঝুরি ছুটিয়ে, যাবে আর আমরা চোর কে চোর বলতে পারব না। চোর ধরা যাবে না, খুনি কে খুনি বলা যাবে না, সারদা নারদা রোজভ্যালীর টাকা চুরি করে দিব্যি ঘুরে বেড়াবে আর আমরা সাধারণ মানুষ গরুর দল তাদের মিথ্যে কথায় সায় দিয়ে নিজের বিবেক বিসর্জন দিয়ে, তাদের সাথে মিছিলে পা মেলাব। গলা ফাটিয়ে বলব না ও দের ধরা যাবে না। এই জন্যই বলছি সত্যিই আমরা গরু হয়ে গেছি। আমরা যদি মানুষ হতাম, আমাদের দুঃখ থাকত না। সত্যিই আমরা বাঙালিরা এখন গরু বনে গিয়েছি, সেই জন্য পশ্চিমবঙ্গের অনেক জায়গায় ভোট বলে কিছু হয় না, কারণ গরু দুধ দেয় ভোট দেয় না ।